– হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় বলো না কাতর স্বরে, বৃথা জন্ম এ সংসারে এ জীবন নিশার স্বপন, দারা পুত্র পরিবার, তুমি কার কে তোমার বলে জীব করো না ক্রন্দন; মানব-জনম সার, এমন পাবে না আর বাহ্যদৃশ্যে ভুলো না রে মন; কর যত্ন হবে জয়, জীবাত্মা অনিত্য…
Tag: হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়
হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়
হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় (১৭ এপ্রিল, ১৮৩৮ – ২৪ মে, ১৯০৩) হিন্দু কলেজের ছাত্র এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক। মধুসূদনের পরবর্তী কাব্য রচয়িতাদের মধ্যে ইনি সে সময় সবচেয়ে খ্যাতিমান ছিলেন। বাংলা মহাকাব্যের ধারায় হেমচন্দ্রের বিশেষ দান হচ্ছে স্বদেশ প্রেমের উত্তেজনা সঞ্চার।
কর্মজীবন
১৮৫৯ সালে হেমচন্দ্র মিলিটারি অডিট অফিসে কেরানী পদে চাকরি গ্রহণ করেন । পরে ক্যালকাটা ট্রেনিং একাডেমীর প্রধান শিক্ষক নিযুক্ত হন। ১৮৬১ সালে এল. এল. ডিগ্রি লাভ করার পর কলকাতা হাইকোর্টে ওকালতি শুরু করেন এবং ১৮৬২ সালে মুন্সেফ পদ পান। কয়েক মাস পরে তিনি পুনরায় হাইকোর্টে ওকালতিতে ফিরে এসে ১৮৬৬ সালে বি.এল. পাস করেন। এপ্রিল ১৮৯০ সালে সরকারি উকিল নিযুক্ত হন।
কবিতা চর্চা
হেমচন্দ্রের প্রধান পরিচয় তিনি একজন দেশপ্রেমিক যশস্বী কবি। তার সর্বাধিক প্রসিদ্ধ রচনা বৃত্রসংহার কাব্য (১৮৭৫-৭৭ দুই খণ্ড) এই কাব্যগ্রন্থে তিনি পৌরাণিক কাহিনীর সাহায্যে অন্যায়ের বিরুদ্ধে আহ্বান জানিয়েছিলেন। জুলাই ১৮৭২-এ এডুকেশন গেজেট পত্রিকায় তার ‘ভারত সঙ্গীত’ কবিতাটি প্রকাশিত হলে তিনি সরকারের রোষানলে পড়েন এবং সম্পাদক ভূদেব মুখোপাধ্যায়কেও সরকারের কাছে জবাবদিহি করতে হয়। এই কবিতায় স্পষ্ট ও প্রত্যক্ষভাবে ভারতবাসীকে অধীনতার পাশ থেকে মুক্ত হবার আহ্বান জানানো হয়। প্রকৃতপক্ষে তিনিই প্রথম জাতীয় কবি যিনি সমগ্র স্বাধীন ভারতের এক সংহতিপূর্ণ চিত্র দেখেছিলেন।হেমচন্দ্রের প্রথম কাব্য চিন্তাতরঙ্গিনী (১৮৬১)। বৃত্রসংহার মহাকাব্য এবং কবির শ্রেষ্ঠ রচনা। এছাড়াও আছে-
- প্রথম কাব্য চিন্তাতরঙ্গিনী (১৮৬১)
- বীরবাহু (১৮৬৪),
- আশাকানন (১৮৭৬),
- সাঙ্গরূপক কাব্য,
- ছায়াময়ী (১৮৮০),
- বিবিধ কবিতা (১৩০০) ও
- বৃত্রসংহার (১৮৭৫)
- দশ মহাবিদ্যা(১৮৮২)
-
খণ্ড কবিতা
- জীবন সঙ্গীত (হেনরি ওয়েডসওয়ার্থ লংফেলোর A Psalm of Life কবিতাটির ভাবানুবাদ)
- ভারত সঙ্গীত
- ভারত বিলাপ
- গঙ্গার উৎপত্তি
- পদ্মের মৃণাল
- ভারত কাহিনী
- অশোকতরু
- কুলিন কন্যাগণের আক্ষেপ
মৃত্যু
কলকাতার খিদিরপুরে ২৪ মে, ১৯০৩ মারা যান।
জীবন সঙ্গীত
– হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় বলো না কাতর স্বরে, বৃথা জন্ম এ সংসারে এ জীবন নিশার স্বপন, দারা পুত্র পরিবার, তুমি কার কে তোমার বলে জীব করো না ক্রন্দন; মানব-জনম সার, এমন পাবে না আর বাহ্যদৃশ্যে ভুলো না রে মন; কর যত্ন হবে জয়, জীবাত্মা অনিত্য…