বাসরবাসর

__হুমায়ূন আহমেদ কপাটহীন একটা অস্থির ঘরে তার সঙ্গে দেখা ।লোহার তৈরি ছোট্ট একটা ঘর ।বাইরের পৃথিবীর সঙ্গে কোন যোগ নেই ।ঘরটা শুধু উঠছে আর নামছে ।নামছে আর উঠছে ।মানুষ ক্লান্ত হয় –এ ঘরের কোন ক্লান্তি নেই।এ রকম একটা ঘরেই বোধহয়…

রাশান রোলেট

__হুমায়ূন আহমেদ টেবিলের চারপাশে আমরা ছ’জনচারজন চারদিকে ; দু’জন কোনাকুনিদাবার বোড়ের মতখেলা শুরু হলেই একজন আরেকজনকে খেয়ে ফেলতে উদ্যত ।আমরা চারজন শান্ত, শুধু দু’জন নিঃশ্বাস বন্ধ করে বসে আছে ।তাদের স্নায়ু টানটান।বেড়ালের নখের মত তাদের হৃদয় থেকেবেরিয়ে আসবে তীক্ষ্ম নখ…

বাবার চিঠি

__হুমায়ূন আহমেদ আমি যাচ্ছি নাখালপাড়ায়।আমার বৃদ্ধ পিতা আমাকে পাঠাচ্ছেন তাঁরপ্রথম প্রেমিকার কাছে।আমার প্যান্টের পকেটে সাদা খামে মোড়া বাবার লেখা দীর্ঘ পত্র।খুব যত্নে খামের উপর তিনি তাঁর প্রণয়িনীর নাম লিখেছেন।কে জানে চিঠিতে কি লেখা – ?তাঁর শরীরের সাম্প্রতিক অবস্থার বিস্তারিত বর্ণনা…

কাচপোকা

__হুমায়ূন আহমেদ একটা ঝকঝকে রঙিন কাচপোকাহাঁটতে হাঁটতে এক ঝলক রোদের মধ্যে পড়ে গেল।ঝিকমিকিয়ে উঠল তার নকশাকাটা লাল নীল সবুজ শরীর।বিরক্ত হয়ে বলল,রোদ কেন?আমি চাই অন্ধকার ।চির অন্ধকারআমার ষোলটা পায়ে একটা ভারি শরীর বয়ে নিয়ে যাচ্ছি-অন্ধকার দেখব বলে।আমি চাই অন্ধকার ।চির…

তিনি

__হুমায়ূন আহমেদ এক জরাগ্রস্থ বৃদ্ধ ছিলেন নিজ মনেআপন ভুবনে।জরার কারণে তিনি পুরোপুরি বৃক্ষ এক।বাতাসে বৃক্ষের পাতা কাঁপেতাঁর কাঁপে হাতের আঙ্গুল।বৃদ্ধের সহযাত্রী জবুথবু-পা নেই,শুধু পায়ের স্মৃতি পড়ে আছে।সেই স্মৃতি ঢাকা থাকে খয়েরি চাদরে।জরাগ্রস্থ বৃদ্ধ ভাবে চাদরের রঙটা নীল হলে ভাল ছিল।স্মৃতির…

কব্বর

__হুমায়ূন আহমেদ তিনি শায়িত ছিলেন গাঢ় কব্বরেযার দৈর্ঘ্য-প্রস্থ বেঁধে দেয়া,গভীরতা নয়।কব্বরে শুয়ে তাঁর হাত কাঁপে পা কাঁপেগভীর বিস্ময়বোধ হয়।মনে জাগে নানা সংশয়।মৃত্যু তো এসে গেছে, শুয়ে আছে পাশেতবু কেন কাটে না এ বেহুদা সংশয়?

সংসার 

__হুমায়ূন আহমেদ শোন মিলি।দুঃখ তার বিষমাখা তীরে তোকেবিঁধে বারংবার।তবুও নিশ্চিত জানি,একদিন হবে তোরসোনার সংসার ।।উঠোনে পড়বে এসে একফালি রোদতার পাশে শিশু গুটিকয়তাহাদের ধুলোমাখা হাতে – ধরা দেবেপৃথিবীর সকল বিস্ময়।

অশ্রু 

__হুমায়ূন আহমেদ আমার বন্ধুর বিয়েউপহার বগলে নিয়েআমি আর আতাহার,মৌচাক মোড়ে এসে বাস থেকে নামলামদু’সেকেন্ড থামলাম।।টিপটিপ ঝিপঝিপবৃষ্টি কি পড়ছে?আকাশের অশ্রু ফোঁটা ফোঁটা ঝরছে? আমি আর আতাহারবলুন কি করি আর?উপহার বগলে নিয়ে আকাশের অশ্রুসারা গায়ে মাখলাম।।হি হি করে হাসলাম।।

গৃহত্যাগী জ্যোৎস্না

 – হুমায়ূন আহমেদ প্রতি পূর্নিমার মধ্যরাতে একবার আকাশের দিকে তাকাইগৃহত্যাগী হবার মত জ্যোৎস্না কি উঠেছে ?বালিকা ভুলানো জ্যোৎস্না নয়।যে জ্যোৎস্নায় বালিকারা ছাদের রেলিং ধরে ছুটাছুটি করতে করতে বলবে-ও মাগো, কি সুন্দর চাঁদ !নবদম্পতির জ্যোৎস্নাও নয়।যে জ্যোৎস্না দেখে স্বামী গাঢ় স্বরে…