– সুনির্মল বসু আকাশ আমায় শিক্ষা দিলউদার হতে ভাই রে,কর্মী হবার মন্ত্র আমিবায়ুর কাছে পাই রে। পাহাড় শিখায় তাহার সমান-হই যেন ভাই মৌন-মহান,খোলা মাঠের উপদেশে-দিল-খোলা হই তাই রে। সূর্য আমায় মন্ত্রণা দেয়আপন তেজে জ্বলতে,চাঁদ শিখাল হাসতে মোরে,মধুর কথা বলতে। ইঙ্গিতে…
Tag: সুনির্মল বসু
সুনির্মল বসু
সুনির্মল বসু (২০ জুলাই ১৯০২ – ২৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৭) একজন বাঙালি কবি ও শিশুসাহিত্যিক।
জন্ম
সুনির্মল বসু ১৯০২ সালের ২০ই জুলাই ভারতের বিহারের গিরিডি নামক স্থানে পিতার কর্মস্থলে জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈত্রিক নিবাস ছিল মুন্সীগঞ্জ জেলার বিক্রমপুরের মালখানগর। পিতার নাম পশুপতি বসু। সাংবাদিক ও সাহিত্যিক গিরিশচন্দ্র বসু ছিলেন তার পিতামহ এবং বিপ্লবী ও সাহিত্যিক মনোরঞ্জন গুহঠাকুরতা ছিলেন তার মাতামহ।ছোটবেলা সাঁওতাল পরগণার মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে তার মনে কবিতা রচনার অনুপ্রেরণা জাগায়। রচিত প্রথম কবিতা ‘প্রবাসী’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। প্রধানত সরস শিশু সাহিত্য রচনাকেই সাহিত্যের মাধ্যম হিসাবে গ্রহণ করেছিলেন। কবিতা রচনা ছাড়াও কিশোর বয়স থেকে চিত্রাঙ্কনেও দক্ষ ছিলেন।
শিক্ষাজীবন
পিতার কর্মস্থল পাটনার গিরিডি স্কুল থেকে ১৯২০ সালে সুনির্মল বসু ম্যাট্রিক পাস করেন। পরবর্তীতে তিনি কলকাতার সেন্ট পলস কলেজে ভর্তি হন, কিন্তু ১৯২১ সালে গান্ধীজীর অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দিয়ে কলেজ ত্যাগ করেন। এরপর অবনীন্দ্রনাথ প্রতিষ্ঠিত আর্ট কলেজে ভর্তি হন।
সাহিত্যসৃষ্টি
ছড়া, কবিতা, গল্প, কাহিনি, উপন্যাস, ভ্রমণকাহিনি,রূপকথা, কৌতুকনাট্য প্রভৃতি শিশু ও কিশোরদের উপযোগী বিভিন্ন বিষয়ক রচনায় সিদ্ধহস্ত ছিলেন। আর তার জনপ্রিয়তার মূলে ছিল ছন্দের চমৎকারিত্ব ও মিলপ্রয়োগের কুশলতা।
গ্রন্থতালিকা
- হাওয়ার দোলা (১৯২৭)
- ছানাবড়া
- বেড়ে মজা
- হৈ চৈ
- হুলুস্থূল
- কথাশেখা
- পাততাড়ি, ছন্দের টুংটাং (১৯৩০)
- আনন্দ নাড়ু
- শহুরে মামা
- কিপটে ঠাকুরদা (১৯৩৩)
- টুনটুনির গান
- গুজবের জন্ম
- বীর শিকারী
- লালন ফকিরের ভিটে
- পাতাবাহার
- ইন্তিবিন্তির আসর (১৯৫০)
- পাহাড়ে জঙ্গলে
এছাড়া তিনি আত্মজীবনী লিখেছিলেন “জীবনখাতার কয়েক পাতা”। এটি লিখেছিলেন ১৯৫৫ সালে।
পুরস্কার
1956 সালে তিনি ভুবনেশ্বরী পদক লাভ করেন।
মৃত্যু
তিনি ১৯৫৭ সালের ২৫শে ফেব্রুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন।
আমরা কিশোর
– সুনির্মল বসু কিশোর মোরা ঊষার আলো, আমরা হাওয়া দুরন্তমনটি চির বাঁধন হারা পাখির মত উরন্ত। আমরা আসি এই জগতে ছড়িয়ে দিতে আনন্দ,সজীবতায় ভরিয়ে দিতে এই ধরণীর আনন তো। আমরা সরল কিশোর শিশু ফুলের মত পবিত্র,অন্তরেতে গোপন মোদের শিল্প, গীতি,…
এমন কী আর খাই
– সুনির্মল বসু তোমরা …যাই বল না ভাই,এমন কী আর খাই!আস্ত পাঁঠা হলেই পরে_ছোট্ট আমার পেটটা ভরেযদি…তার সঙ্গে ফুলকো-লুচিগণ্ডা বিশেক পাই;-এমন কী আর খাই!চপ কাটলেট পড়লে পাতে,আপত্তি আর নাইকো তাতে,আর…কোপ্তা-কাবাবা-কালিয়াতেঅমত আমার নাই;এমন কী আর খাই!হয় না হজম এখন দাদাখাওয়া দাওয়ায়া…
হবুচন্দ্রের আইন
– সুনির্মল বসু হবুচন্দ্র রাজা বলেন গবুচন্দ্রে ডেকে–“আইন জারী করে দিও রাজ্যেতে আজ থেকে,মোর রাজ্যের ভিতর–হোক্ না ধনী, হোক্ না গরীব, ভদ্র কিংবা ইতর,কাঁদতে কেহ পারবে নাক, যতই মরুক শোকে–হাসবে আমার যতেক প্রজা, হাসবে যত লোকে।সান্ত্রী-সেপাই, প্যায়দা, পাইক ঘুরবে ছদ্মবেশে,কাঁদলে…
সব-পেয়েছির দেশে
– সুনির্মল বসু গল্প না ভাই, কল্পনা নয়,স্বপন-বুড়ো এসেআমায় নিয়ে উধাও হোলোসব-পেয়েছির দেশে।স্বপন-বুড়োর লম্বা দাড়ি,পোষাকটি তার রং-বাহারী,আমায় নিয়ে দিচেছ পাড়িহাল্কা-হাওয়ায় ভেসে;সব-পেয়েছির দেশে রে ভাই,সব-পেয়েছির দেশে।স্বপন-বুড়ো, রসিক-চূড়োনিদ্-মহলের রাজা,থুর্থুরে তার শরীর বটে,মনটি আজও তাজা;সব-পেয়েছির দেশে চলোসকল ছেলে মেয়ে,উঠব মেতে সবাই সেথায়সকল জিনিস…