বর্ষার চিঠি

– শ্রীজাত সোনা, তোমায় সাহস করে লিখছি। জানি বকবেপ্রিপারেশন হয়নি কিচ্ছু। বসছি না পার্ট টুতেমাথার মধ্যে হাজারখানেক লাইন ঘুরছে, লাইনএক্ষুনি খুব ইচ্ছে করছে তোমার সঙ্গে শুতে চুল কেটে ফেলেছ? নাকি লম্বা বিনুনিটাইএপাশ ওপাশ সময় জানায় পেন্ডুলামের মতোদেখতে পাচ্ছি স্কুলের পথে…

অপেক্ষা

– শ্রীজাত ভ্রু পল্লবে ডাক দিয়েছ, বেশ।আমার কিন্তু পুরনো অভ্যেসমিনিট দশেক দেরীতে পৌঁছনো তোমার ঘড়ি একটু জোরেই ছোটেআস্তে করে কামড় দিচ্ছ ঠোঁটেঠোঁটের নীচে থমকে আছে ব্রণ কুড়ি মিনিট? বড্ড বাড়াবাড়ি!দৌড়ে ধরছ ফিরতিপথের গাড়িফিরতিপথেই ভুল হল সময়— আমারও সব বন্ধুরা গোলমেলেবুঝিয়েদেবে…

শেষ দিন: ২০০১

– শ্রীজাত কোনওদিন তোকে বলাও হবে না জানিআমি কোন-কোন সুড়ঙ্গে বেঁচে থাকিকপ্টার থেকে ত্রাণের বদলে কারাবিষ ছুড়েছিল… কলেজে-পালানো পাখি— কোনওদিন তোকে বোঝানো যাবে না, কেনকবিতায় আর বিশ্বাস থাকছে নাতার চে’ আমার নতুন চেহারা ভাল,ফুটপাত থেকে দরদাম করে কেনা— চাপিয়ে নিয়েছি।…

স্বপ্ন

– শ্রীজাত বিকেলবেলা বাড়ি থাকাও পাপবাইরে হাওয়া, ঘরে নতুন টিউবমাথায় বাজে একলা ডায়াল টোন গ্যাসের দাম বাড়ছে, প্রেম নেই,দুটো প্রাচীন টিউশানি হারালামতবু আমায় চিনছে এতজন… একেকদিন বাড়ি ফেরার পথেএকেকদিন, সত্যি মনে হয়আমি বোধহয়… আমি বোধহয় ক্লোন ! এখন আমার স্বপ্ন…

ধর্ম

– শ্রীজাত এখনও আসে নতুন লেখা, মগজ থেকে শব্দ নামে ঠোঁটেএখনও মাথাখারাপ, ঘোড়া দিগ্বিদিক জ্ঞান হারিয়ে ছোটে বাচ্চাদের গান শেখাই, ছাত্রপিছু দেড়শো টাকা মোটেশুঁকে বেড়াই ঘরদুয়ার, কোথাও যদি কিছু একটা জোটে এখনও পাড়া সাজানো হয়। সবাই মিলে ছুটি কাটায় ভোটেকোনও…

এর পরেও

– শ্রীজাত এর পরেও চুপ করে থাকাএর পরেও সংযমী সময়এর পরেও পতপত পতাকাএর পরেও দৃঢ় কনভয় এর পরেও সন্দেহ অতীতএর পরেও চকচকে স্যালুটএর পরেও লক্ষ্য শুধু জিতএর পরেও বাহিনী মজুত এর পরেও শব্দশালীনতাএর পরেও স্তুতি আর স্তবএর পরেও টক শো…

চন্দ্রকোষ

– শ্রীজাত তীক্ষ্ণফলায় গেঁথেছি চাঁদখেলা শুরু হলে তোমাকে বাদ(তোমাকে বাদ তোমাকে বাদ) গলিয়ে ফেলেছি পুরনো ঘুমপথ হারানোর কী মরশুম(কী মরশুম, কী মরশুম) হারিয়েছি পথ তোর পাড়ায়ইতিউতি কারা গলা বাড়ায়(সাহস তো খুব! গলা বাড়ায়!) গলা কেটে নাও। কাটা গলায়ঝরে পরে সুর।…

সে আর আমি

 – শ্রীজাত তার যেরকম তছনছিয়া স্বভাবঝড়ের পিঠে সওয়ার হয়ে আসে, আমিও তেমন অজ পাড়াগাঁর নবাবসন্ধেবেলা মুক্তো ছড়াই ঘাসে তার যেরকম বিরুদ্ধতার মেজাজহঠাত্ করে উল্টোদিকে ছোটে আমিও তেমন আগুনজলে ভেজাসময় বুঝে ঠোঁট বসাব ঠোঁটে তার যেরকম উল্টোপাল্টা খুশিহালকা রঙের বাতাসে চুল…

সংসারগীতিকা – ১

– শ্রীজাত একমুঠো দুমুঠো চালে তিনমুঠো চারমুঠোভাত রেঁধেছি। গরম। তুমি ঘুম থেকে না উঠো তুমি ঘুম থেকে উঠো না। সূরয পশ্চিমে যাক ঢ’লেমাথার ধারে জানলা খোলা, বৃষ্টি বেশি হলে বেশি বৃষ্টি হলেই চুল ভিজবে। চুলখোলা চুলভেজাশরীর বলে বাইরে যাব, মন…

যোদ্ধার ডাইরি থেকে

– শ্রীজাত ভেবেছিলাম শিখব পালকসফল হলাম অস্ত্রচালনায় সমস্তদিন ধান্দা পেটেরসময় আমার মাংস কেটে খায় যুদ্ধে জেতা, যুদ্ধে হারাএই হিসেবেই কাটল সারারাত অকাজ আমায় করল কাজীস্বীকার করি, তোমার বাজি মাত নির্বাসনে একলা থাকিতোমায় ভেবে উদাস রাখি দিন মিটিয়ে নিয়ে ঝগড়াক্ষুধাতুমি আমায়…

পূজা

– শ্রীজাত আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণেছ্যাঁকা যে কেমন লাগে, সবাই জানে। পুড়ে ঘা তৈরি হবে, তবেই তো সেজ্বালাবার সাহস পাবে লিখতে বসে …..তারও খেল পাল্টে যাবে পরের দানে যে ছিল নিয়মভাঙা পাগলা ঘোড়াসে হবে সস্তাদামের রাঙতামোড়ানো বলে এল . বি…