তোমাকে অভিবাদন প্রিয়তমা

– শহীদ কাদরী ভয় নেইআমি এমনব্যবস্থা করবো যাতে সেনাবাহিনীগোলাপের গুচ্ছ কাঁধে নিয়েমার্চপাস্ট করে চলে যাবেএবং স্যালুট করবেকেবল তোমাকে প্রিয়তমা।ভয় নেই, আমি এমন ব্যবস্থা করবোবন-বাদাড় ডিঙ্গিয়েকাঁটা-তার, ব্যারিকেড পার হয়ে, অনেকরণাঙ্গনের স্মৃতি নিয়েআর্মার্ড-কারগুলো এসে দাঁড়াবেভায়োলিন বোঝাই করেকেবল তোমার দোরগোড়ায় প্রিয়তমা।ভয় নেই, আমি…

সঙ্গতি

– শহীদ কাদরী বন্য শূকর খুঁজে পাবে প্রিয় কাদামাছরাঙা পাবে অন্বেষণের মাছ,কালো রাতগুলো বৃষ্টিতে হবে শাদাঘন জঙ্গলে ময়ূর দেখাবে নাচপ্রেমিক মিলবে প্রেমিকার সাথে ঠিক-ইকিন্তু শান্তি পাবে না, পাবে না, পাবে না…একাকী পথিক ফিরে যাবে তার ঘরেশূন্য হাঁড়ির গহ্বরে অবিরতশাদা ভাত…

কোনো ক্রন্দন তৈরি হয় না

 – শহীদ কাদরী একটি মাছের অবসান ঘটে চিকন বটিতে,রাত্রির উঠোনে তার আঁশ জ্যোৎস্নার মতোহেলায়-ফেলায় পড়ে থাকেকোথাও কোনো ক্রন্দন তৈরি হয় না,কোথাও কোনো ক্রন্দন তৈরি হয় না; কবরের রন্ধ্রে-রন্ধ্রে প্রবেশ করে প্রথম বসন্তের হাওয়া,মৃতের চোখের কোটরের মধ্যে লাল ঠোঁট নিঃশব্দে ডুবিয়ে…

স্মৃতি : কৈশোরিক

 – শহীদ কাদরী অদৃশ্য ফিতে থেকে ঝুলছে রঙিন বেলুনরাত্রির নীলাভ আসঙ্গে আর স্বপ্নের ওপরযেন তার নৌকা- দোলা; সোনার ঘণ্টার ধ্বনিছড়িয়ে পড়ছে সমস্ত শহরের! আমি ফিরলামঝর্ণার মতো সেই গ্রীষ্ম দিনগুলোর ভেতরযেখানে শীৎকার, মত্ততা আর বেলফুলে গাঁথাজন্মরাত্রির উৎসবের আলো; দীর্ঘ দুপুর ভরেঅপেমান…

মাংস, মাংস, মাংস…

– শহীদ কাদরী আমাকে রাঙাতে পারে তেমন গোলাপকখনও দেখি না। তবে কাকে, কখন, কোথায়ধরা দেবো? একমাত্র গোধূলি বেলায়সবকিছু বীরাঙ্গনার মতন রাঙা হয়ে যায়।শৈশবও ছিলো না লাল। তবে জানি,দেখেছিও, ছুরির উজ্জ্বলতা থেকে ঝরে পড়ে বিন্দু বিন্দু লাল ফোঁটা তবে হাত রাখবো…

বাংলা কবিতার ধারা

– শহীদ কাদরী কে যেন চিৎকার করছে প্রাণপণে `গোলাপ! গোলাপ!’ঠোঁট থেকে গড়িয়ে পড়ছে তার সুমসৃণ লালা,`প্রেম, প্রেম’ বলে এক চশমা-পরা চিকণ যুবকসাইকেল-রিকশায় চেপে মাঝরাতে ফিরছে বাড়ীতে,`নীলিমা, নিসর্গ, নারী’- সম্মিলিত মুখের ফেনায়পরস্পর বদলে নিলো স্থানকাল, দিবস শর্বরী হলোসফেদ পদ্মের মতো সূর্য…