– মাহবুবুল আলম চৌধুরী ওরা চল্লিশজন কিংবা আরো বেশিযারা প্রাণ দিয়েছে ওখানে—রমনাররৌদ্রদগ্ধ কৃষ্ণচূড়ার গাছের তলায়ভাষার জন্য, মাতৃভাষার জন্য—বাংলার জন্য।যারা প্রাণ দিয়েছে ওখানেএকটি দেশের মহান সংস্কৃতির মর্যাদারজন্যআলাওলের ঐতিহ্যকায়কোবাদ, রবীন্দ্রনাথ ও নজরুলেরসাহিত্য ও কবিতার জন্যযারা প্রাণ দিয়েছে ওখানেপলাশপুরের মকবুল আহমদেরপুঁথির জন্যরমেশ শীলের…
Tag: মাহবুবুল আলম চৌধুরী
মাহবুব উল আলম চৌধুরী
মাহবুব উল আলম চৌধুরী (৭ নভেম্বর, ১৯২৭ – ২৩ ডিসেম্বর, ২০০৭) একজন কবি, সাংবাদিক এবং ভাষা সৈনিক। তিনি একুশের প্রথম কবিতার কবি।
জন্ম ও প্রারম্ভিক জীবন
মাহবুব উল আলম চৌধুরী চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার গহিরা আসাদ চৌধুরী বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা আহমদুর রহমান চৌধুরী এবং মাতা রওশন আরা বেগম। তিনি ১৯৪৭ সালে গহিরা হাইস্কুল হতে বৃত্তিসহ প্রথম বিভাগে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে চট্টগ্রাম কলেজে ভর্তি হন। কিন্তু তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর কলেজ পরিদর্শনে এসে ছাত্রদের উদ্দেশে বক্তৃতা প্রদানকালে আরবি হরফে বাংলা প্রচলনের পক্ষে মতামত ব্যক্ত করলে মাহবুব উল আলম চৌধুরী প্রতিবাদে সোচ্চার হন এবং শেষ পর্যন্ত লেখাপড়া অসমাপ্ত রেখেই কলেজ ছাড়তে বাধ্য হন।
রচনা
কাব্যগ্রন্থ
- আবেগধারা (১৯৪৪)
- ইস্পাত (১৯৪৫)
- অঙ্গীকার (১৯৪৬)
- কাঁদতে আসিনি ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি (১৯৮৮)
- সূর্যাস্তের অস্তরাগ (২০০৪)
- সূর্যের ভোর (২০০৬)
নির্বাচিত কলাম
- গণতান্ত্রিক স্বৈরতন্ত্র, স্বৈরতান্ত্রিক গণতন্ত্র (২০০৬)
ছড়ার বই
- ছড়ায় ছড়ায় (২০০৪)
নাটক
- দারোগা (১৯৪৪)
- আগামীকাল (১৯৫৩)
পুস্তিকা
- মিসরের মুক্তিযুদ্ধ (১৯৫৬)
- বিপ্লব (১৯৪৬)
পুরস্কার ও সম্মাননা
১৯৮৬ সালের জানুয়ারি মাসে মাহবুব উল আলম চৌধুরীকে বাংলা একাডেমী কর্তৃক ফেলোশিপ এবং ১৯৯০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ক্রান্তি শিল্পীগোষ্ঠী কর্তৃক সংবর্ধনা দেয়া হয়। ১৯৯৭ সালে চট্টগ্রামের অনোমা সাংস্কৃতিকগোষ্ঠী, ১৯৯৯ সালে চট্টগ্রাম সঙ্গীত পরিষদ, ২০০০ সালে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব, ২০০১ সালে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, ২০০২ সালে পদাতিক নাট্য সংসদ কর্তৃক সংবর্ধনাসহ মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কবিকে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিকগোষ্ঠী সংবর্ধনা প্রদান করে। এ ছাড়া ২০০৫ সালের ১৫ মার্চ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আবৃত্তি মঞ্চের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা ও পদক দেয়া হয়। ২০০৫ সালে মুক্তিযুদ্ধ জাতীয় পুরস্কার, ২০০৬ সালে ঋষিজ পদক ও সংবর্ধনা দেয়া হয়। ২০০৯ সালে তিনি মরণোত্তর একুশে পদকে ভূষিত হন। ভাষাসৈনিক কবি মাহবুব উল আলম চৌধুরীর ৮৪তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশ মুসলিম ওয়েলফেয়ার সোসাইটি আয়োজিত ‘জীবন ও কর্ম’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা বলেন তার অমর সৃষ্টি ‘কাঁদতে আসিনি ফাঁসির দাবী নিয়ে এসেছি’ যুগে যুগে বাঙালি জাতির সাহস ও শক্তির উৎস হয়ে থাকবে।
মৃত্যুবরণ
২০০৭ সালের ১৯ ডিসেম্বর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁকে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভরতি করা হয়। পাঁচদিন কোমায় থাকায় পর মাহবুব উল আলম চৌধুরী ২৩ ডিসেম্বর দেড়টায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে। তাকে সমাহিত করা হয় বনানী গোরস্থানে।