– পাবলো নেরুদা অনুবাদঃ শিরীষ রাতের আঁধার থেকে স্মৃতির কুহকে ভেসে যাইনদীর আর্তনাদ মিশে গেছে সমুদ্রের বুকেভোরের একলা তৃণের মত আমিআর কেউ নেইকিছু নেইমৃত পুষ্পের বরষায়ধ্বংস কূপের গভীরে গভীরে ঢুকে যাইধ্বংস আর উড্ডয়নে মিশে আছ তুমিতোমার বুকের কিনার থেকে উড়ে…
Tag: পাবলো নেরুদা
পাবলো নেরুদা
রিকার্দো এলিসের নেফতালি রেইয়েস বাসোয়ালতো (১২ জুলাই ১৯০৪ – ২৩ সেপ্টেম্বর ১৯৭৩), যিনি তার ছদ্মনাম এবং পরবর্তীকালে আইনসিদ্ধ নাম পাবলো নেরুদা নামে অধিক পরিচিত, একজন চিলীয় কবি-কূটনীতিক ও রাজনীতিবিদ ছিলনে। তিনি ১৯৭১ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার অর্জন করেন। নেরুদা মাত্র তেরো বছর বয়েসে কবি হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন এবং বিভিন্ন ধরনের কবিতা লিখতে শুরু করেন, তন্মধ্যে ছিল পরাবাস্তববাদী কবিতা, ঐতিহাসিক মহাকাব্য, প্রকাশ্য রাজনৈতিক ইশতেহার, গদ্য আত্মজীবনী এবং ভালোবাসার কবিতা, তন্মধ্যে একটি হল ১৯২৪ সালে প্রকাশিত বিশটি কবিতা ভালোবাসার একটি গান হতাশার শীর্ষক কাব্যগ্রন্থ।
প্রাথমিক জীবন
রিকার্দো এলিয়েসের নেফতালি রেইয়েস বাসোয়ালতো ১৯০৪ সালের ১২ই জুলাই চিলির সান্তিয়াগোর ৩৫০ কিমি দক্ষিণের লিনারেস প্রদেশের (বর্তমান বৃহত্তর মাউলে অঞ্চল) পাররাল শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা হোসে দেল কারমেন রেইয়েস মোরেলস একজন রেলওয়ের কর্মকর্তা এবং মাতা রোসা নেফতালি বাসোয়ালতো ওপাজো একজন বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা ছিলেন। তার মাতা তার জন্মের দুমাস পর মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুর পর পরই রেইয়েস তেমুকোতে পাড়ি জমান। তিনি সেখানে ত্রিনিদাদ কানদিয়া মালভারদে নামক একটি মহিলাকে বিয়ে করেন, যার পূর্বে নয় বছর বয়সী রোদোলফো দে লা রোসা নামক একজন পুত্রসন্তান ছিল। নেরুদা তেমুকোতে তার সৎভাই রোদোলফো এবং আউরেইয়া তোলরা নামক একজন কাতালান মহিলার সাথে তার পিতার বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের ফলে জন্ম নেওয়া সৎবোন লরা হেরমিনিয়া “লরিতা”র সাথে বেড়ে ওঠেন।তিনি তার প্রথম দিকের কবিতাগুলো ১৯১৪ সালের শীতকালে রচনা করেছিলেন। নেরুদা একজন নাস্তিক।
সাহিত্যিক জীবন
নেরুদার বাবা তার লেখালেখি ও সাহিত্য নিয়ে আগ্রহের বিরোধিতা করলেও স্থানীয় বিদ্যালয়ের প্রধান ও ভবিষ্যৎ নোবেল পুরস্কার বিজয়ী গ্যাব্রিয়েলা মিস্ত্রালদের মতো আরও অনেকজন থেকে উৎসাহ লাভ করেন। ১৯১৭ সালের ১৮ই জুলাই মাত্র তেরো বছর বয়েসে দৈনিক সংবাদপত্র লা মানানা-তে নেফতালি রেইয়েস নামে স্বাক্ষরিত তার প্রথম লেখা প্রবন্ধ আন্তরিকতা ও অধ্যবসায় প্রকাশিত হয়।১৯১৮ থেকে ১৯২০ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত স্থানীয় পত্রিকায় নেফতালি রেইয়েস নামে স্বাক্ষরিত মিস অজোস (আমার চোখ)-সহ তার বহু কবিতা এবং প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়। ১৯১৯ সালে তিনি ইয়েগোস ফ্লোরালেস দেল মাউলে সাহিত্য প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন আর সেখানে তিনি তার কবিতা কমুনিওঁ আইডিয়াল বা নকচুর্নো আইডিয়াল-এর জন্য তৃতীয় স্থান অধিকার করেন। ১৯২০ সালের মাঝামাঝি থেকে তিনি পাবলো নেরুদা ছদ্মনাম গ্রহণ করে তিনি কবিতা ও গদ্য প্রকাশ এবং সাংবাদিকতা শুরু করেন। তিনি চেক কবি ইয়ান নেরুদা নামানুসারে তার ছদ্মনাম গ্রহণ করেছিলেন বলে ধারণা করা হয়,তবে কিছু সূত্রে উল্লেখ করা হয় স্যার আর্থার কোনান ডয়েলের আ স্টাডি ইন স্কারলেট উপন্যাসের মোরাভীয় বেহালাবাদক উইলমা নেরুদা থেকে তিনি এই নামের অনুপ্রেরণা লাভ করেন। ছদ্মনামে লেখা প্রকাশের ক্ষেত্রে তরুণ এই কবির উদ্দেশ্য ছিল তার কবিতার ব্যাপারে তার পিতার অসম্মতিকে উপেক্ষা করা।
শেষ জীবন ও মৃত্যু
পিনোচের শাসনামলে নেরুদা ১৯৭৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। তাঁর মনে হয়েছিল কোনো এক ডাক্তার পিনোচেটের আদেশে তাঁকে ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে হত্যা করার পরিকল্পনা করেছেন। নেরুদা ১৯৭৩ সালের ২৩শে সেপ্টেম্বর তাঁর নিজ বাড়িতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।
উত্তরাধিকার
চিলিতে নেরুদার তিনটি বাড়ি ছিল। বর্তমানে সবকয়টি জাদুঘর হিসেবে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত; সেগুলো হল সান্তিয়াগোতে অবস্থিত লা চাসকোনা, ভালপারাইসোয় অবস্থিত লা সেবাস্তিয়ানা এবং ইসলা নেগ্রায় অবস্থিত কাসা দে ইসলা নেগ্রা, যেখানে তিনি ও মাটিল্ডে উরুটিয়া সমাহিত।
ওয়াশিংটন, ডি.সি.র অরগানাইজেশন অব আমেরিকান স্টেটস ভবনের চত্বরে নেরুদার একটি আবক্ষ মূর্তি অবস্থিত।
হাঁটছি
– পাবলো নেরুদা অনুবাদ: ইমন জুবায়ের প্রায়শ এমন হয়-নিজেকে মানুষ ভাবলে বমনেচ্ছা হয়হেঁটে যাই দর্জির দোকান আর সিনেমাহলের ভিতর দিয়েশুকিয়ে ওঠা, জলনিরোধক, পশমী কাপড়ের তৈরি একটি রাজহাঁসনিয়ন্ত্রণ করছে আমার পথ ছাই আর জরায়ূর জলে।নাপিতের দোকানের গন্ধ আমাকে ঠেলে দেয় ঘোড়ার…
প্রশ্নের বই থেকে ৩
– পাবলো নেরুদা অনুবাদ: সমর গোসাই বলো আমাকে গোলাপ কি নগ্ননাকি নগ্নতাই তার পোশাক ?কেন গাছেরা লুকায়মুলে মুলে দীপ্ত প্রভা ?কে শোনে হতাশার বাণীচোরের মত ছুটে চলা অটোমোবাইলের ?এর চেয়ে দু:খের কি কিছু দেখছ এ জগতেবৃষ্টিতে ভিজতে থাকা রেল গাড়ি…
আর কিছু নয়
– পাবলো নেরুদা আর কিছু নয়সত্যের সাথে আমার চুক্তিএ পৃথিবীর জন্যে সঞ্চয় করবো আলোআমি যা চাই তা হলো রুটিসংগ্রাম কোনো দিনই অভাব অনুভব করবে না আমারঅথচ এখানে যাকিছু ভালোবাসি সবই পেয়েছিযা হারিয়েছি তা হলো নির্জনতা।এখন আমি আর ওই পাথরের ছায়ায়…
নিঃসঙ্গ মৃত্যু
– পাবলো নেরুদা অনুবাদঃ অসিত সরকার নির্জন কবরখানাস্মৃতিস্তম্ভগুলো নিঃশব্দ অস্থিতে পরিপূর্ণ,অন্ধকার সংকীর্ণ গুহার মধ্যে দিয়ে হৃদয় আসে যায়ঃযেন জন্মলগ্ন এক জাহাজের খোলের মধ্যে আমরা মারা গেলামযেন হৃদয়ের অতলান্তে আমরা তলিয়ে গেলামযেন সত্তার আপন অস্তিত্বে আমরা মিশে গেলাম।অজস্র মৃতদেহক্লেদাক্ত হিমেল পা,পাঁজরে…
জীবন
– পাবলো নেরুদা অনুবাদ: অসিত সরকার মাঝে মাঝে যখন তোমার কথা ভাবিকি যে খারাপ লাগে!যেহেতু তুমি জানো নাআমার সঙ্গে রয়েছে অগণন বিজয়ী মানুষের মুখযা তুমি দেখতে পাও না,আমার সঙ্গে এগিয়ে চলেছে অগণন পা আর হৃদয়,তাই আমি একা নইএকা হিসেবে নিজের…
আমার কাছ থেকে দূরে থেকো না
– পাবলো নেরুদা আমার কাছ থেকে দূরে থেকো না, দয়া করোএকটা দিন অনেক অনেক দীর্ঘ সময়,অনেক দূরে ঘুমে থাকা ট্রেনের আশায়নীরব ইস্টিশানের জন্যে, আমার জন্যে।একদন্ড আমায় ছেড়ে যেয়ো না, কারণ-ভয়ের শীতল স্রোত ঘিরে ফেলে আমায়,অথবা ঘর খোঁজা ধোঁয়া এসে চেপে…
আলোর জন্তুরা
– পাবলো নেরুদা আজ হারিয়ে যাওয়া অরণ্যের গভীরেসে শুনতে পাচ্ছে শত্রুর আওয়াজ, পালাচ্ছে ছুটেঅন্যদের থেকে নয়, নিজেরই কাছ থেকেপালাচ্ছে সেইসব সংঘবদ্ধতা জড়িয়ে ছিল আমাদেরজীবনের মানে থেকেকারণ শ্ধু একবার,শুধুই একবারএকটাই অক্ষর বা নিঃস্তব্ধ খানিকটা বিরতি |অতৃপ্ত ঢেউয়ের শব্দঠেলে দেয় সত্যের মুখোমুখি…
মাচো পিচুর উচ্চতা থেকে
– পাবলো নেরুদা অনুবাদ:ইমন জুবায়ের আমার জন্মের সঙ্গে জেগে ওঠ ভাই আমারগভীর থেকে বাড়িয়ে দাও তোমার মলিনহাত ।এইসব পাথরের দৃঢ় শাসন থেকে ফিরবেনা তুমি।পাতালের সময় থেকে উঠবে না জেগে ।ফিরে আসবে না তোমার খসখসে কন্ঠস্বর,কোটর থেকে তোমার বিস্ফারিত চোখ দুটি…
যদি আমায় তুমি ভুলে যাও
– পাবলো নেরুদা অনুবাদ:ইমন জুবায়ের একটি কথা আমি তোমাকেজানিয়ে দিতে চাই ।তুমি কি জানআমি যখন আমার জানালার বাইরেমন্থর হেমন্তের লাল ডালেস্ফটিক চাঁদটির দিকে তাকাই,যদি ছুঁয়ে দিইআগুনের কাছটিতেঅবোধগম্য কিছু ছাইকিংবা কাটা গুঁড়ির বৃত্তাকার শরীর-এসবই তোমার নিকটে আমায় বহন করে নিয়ে যায়,যেনবা-…
আলোর স্তম্ভ
– পাবলো নেরুদা অনুবাদ: ইমন জুবায়ের ও আলোর স্তম্ভ, বিষন্ন সুন্দরঐ বৃহদায়তন কন্ঠহার আর সমুদ্রের মূর্তিচুনাপাথর-চোখ, বিপুলা জলধির সম্মান,শোকার্ত সমুদ্র-পাখির কান্না, সমুদ্রের দাঁত,প্রশান্ত বাতাসের স্ত্রী, ও অতলের নিষ্পেষিত ঝোপেরদীর্ঘ কান্ড থেকে উত্থিতপৃথক গোলাপরুপান্তরিত দীপপুঞ্জমালাও প্রাকৃতিক নক্ষত্র, সবুজাভ উষ্ণীষএকা তোমার নিঃসঙ্গ…
সাদা মৌমাছি
– পাবলো নেরুদা অনুবাদ: ইমন জুবায়ের সাদা মৌমাছি, তুমি আমার ভিতরে গুনগুন কর- তুমি মধু পান করে মাতালধোঁওয়ার ধীর কুন্ডলীতে তুমি ঘুরে ঘুরে উড়ছআমি দিশেহারা, প্রতিধ্বনিশূন্য শব্দ,সকলই হারিয়েছে যে- অথচ যার সকলই ছিল।সর্বশেষ বাঁধন, আমার আকাঙ্খায় তুমি তোল ঝড়আমার বিরানভূমিতে…
লেবু
– পাবলো নেরুদা অনুবাদ: ইমন জুবায়ের লেবু ফুল থেকেঢিলেঢালা ভাবেজ্যোস্নায়, প্রেমেরসুদৃঢ় তৃষ্ণারসারৎসার,গন্ধে পরিপূর্ন,লেবু গাছের হলদেউত্থান,লেবুগুলোগাছের কৃত্রিমভবন থেকেনিচের দিকে নড়ছেসংবেদনশীল বানিজ্য!বন্দর এ নিয়ে বৃহৎবাজারআলোর জন্য ওবর্বর স্বর্ণের জন্য।আমরাঅলৌকিকেরঅর্ধেকটা খুলি,আর, নোনা স্তরের কিনারেজমাট এসিড:সৃষ্টিরআদি রস,বিস্ময়কর, অপরিবর্তনীয়,জীবন্ত:কাজেই সজীবতাএকটি লেবুর ভিতরে থাকে বেঁচে,খোলশের মিষ্টিগন্ধী…
পিঙ্গলবর্ণের উচ্ছ্বল শিশু
– পাবলো নেরুদা অনুবাদ: ইমন জুবায়ের পিঙ্গলবর্ণের উচ্ছ্বল শিশু, সূর্য -যা সৃজন করে ফলআর শষ্যকে করে পরিপক্ক, সমুদ্রশ্যাওলাকে করে আন্দোলিততোমার সুখি শরীর আর তোমার উজ্জ্বল চোখ করেছে নির্মানআর তোমার মুখে দিয়েছে জলের হাসি।কৃষ্ণকায় এক যন্ত্রণাকাতর সূর্যকচি পাতায় জড়ানোতোমার কালো কেশরে…
বিদায় ২
-পাবলো নেরুদা এক.ভালবাসি সেই ভালবাসা যা হতে পারেশাশ্বতআবার হতে পারে ক্ষণস্হায়ী।ভালবাসি সেই ভালবাসা যা মুক্তি দিতে চায়আবার ভালবাসার জন্য।ভালবাসি সেই স্বর্গীয় ভালবাসা যা নিকটবর্তী হয়আবার যা দূরে চলে যায়। দুই.তোমার চোখে চোখ রেখে আমার চোখ আনন্দ পাবে না,আর আমার বেদনা…
বিদায়
-পাবলো নেরুদা এক.তোমার অন্তস্হল থেকে, এবং হাটুঁ গেড়ে বসাএক বিষণ্ণ শিশু, আমার মত, দেখে আমাদের।সেই জীবনের জন্য যা পুড়িয়ে দেবে তার ধমনীগুলোআমাদের জীবনের সঙ্গে বাধাঁ পড়তে বাধ্য হবে।সেই হাতগুলি দিয়ে, তোমার হাতগুলির কন্যারাআমার হাতগুলিকে হত্যা করতে বাধ্য হবে।ধরণীতে তাদের উন্মুক্ত…
কুকুরটি বেঁচে নেই
– পাবলো নেরুদা আমি তাকে বাগানের মাঝামাঝি কবর দিয়েছিএখন আমাকে ভীষণ শক্তিহীন মনে হচ্ছে।তার সাথে বহুদিন সঠিক পথেই হেঁটেগেছিঢেউখেলা চুলে যে হাঁটবে না আমার সাথে কোনদিন।আমি বাস্তবাদী, আকাশের শূন্যতাকে বিশ্বাস করি নাজানি আমাদের মতো কারো জন্য কোন স্বর্গ নেইতবে কুকুরটি…
সনেট ৬৯
– পাবলো নেরুদা অনুবাদ:জি.এম.তানিমশূন্যতা মানে তোমার না থাকাদুপুরকে একটা নীল ফুলের মতো চিরেতোমার না চলা, কুয়াশা ঘেরা বিকেলেনুড়িমাখা পথে তোমার না চলে যাওয়া,তোমার হাতে সোনালি সেই আলোনা থাকা, যে আলো চোখে পড়ে না কারো,যে আলো সবার অগোচরে বেড়ে ওঠেলাল গোলাপের…
সবচে’ দুখের কবিতা
– পাবলো নেরুদা অনুবাদ:জি.এম.তানিম আমি আজ রাতে সবচে’ দুখের কবিতা লিখতে পারি।লিখতেই পারি (যেন মনে করো): “হাজার তারার মেলা,রাতের আকাশে, নীলচে তারারা মিটিমিটি জ্বলে দূরে।”রাতজাগা হাওয়া হারায় আকাশে ঘুমমাখা গান গেয়ে ।আমি আজ রাতে সবচে’ দুখের কবিতা লিখতে পারি।ভালোবেসেছিল এই…
নেংটো সুন্দরির বন্দনায়
–পাবলো নেরুদা অনুবাদ:চয়ন খায়রুল হাবিব খাস কলিজায়পাক সাফ চোখেআমি তোমার সৌন্দর্জ উদজাপন করিঅঝরে ঝরা রক্তপাত ধরে রাখিযাতে তা লাগাম পরাতে পারেআমার কবিতায় শোয়াতোমার শরিরের বাকেজংগল ঘেরা জমিতেঅথবা সমুদ্রে সার্ফিংঃসুগন্ধি ফেনায়সাগরের বাজনায়।ও নেংটো সুন্দরিঃসমান তালে তালে সুন্দরতোমার পায়ের পাতাপ্রাচিন বাতাস আর…
কবিতা
– পাবলো নেরুদা অনুবাদ:চয়ন খায়রুল হাবিব এবং ঐ বয়সটাতে…কবিতা এসেছিলআমার খোজে।আমি জানতাম না,জানতাম না কোথ্যেকে,শিতকাল না কি নদি থেকে,কিভাবে কখন জানতে পারি নি,না, কোনরকম শব্দও শুনিনি,নিশব্দও না,কিন্তু রাস্তা থেকে ও আমাকে ডেকেছিল,পুড়তে পুড়তে,ভয়ঙ্কর আগুনের হলকায় হুটোপুটি করতে করতে,রাতের ডালপালারা ডেকেছিল…
তোমাকে পছন্দ করি স্থির
– পাবলো নেরুদা অনুবাদ:চয়ন খায়রুল হাবিবতোমাকে পছন্দ করি এক্কেবারে স্থিরএমনটা য্যনো তুমি আসলে নেইআমাকে শুনতে পাচ্ছ দুর থেকে,কিন্তু আমার গলার স্বর তোমাকে ছুচ্ছে নাতোমার চোখগুলো কোথায় য্যনো উড়ে গেছেতোমার মুখ তালামারা চুমুর সিলগালায়সবকিছুতেই আমার আত্মাতুমি আবার আমার সবকিছুতেইআমার আত্মার স্বপ্নের…
মাতাল ও মাছকন্যা
– পাবলো নেরুদা অনুবাদ:চয়ন খায়রুল হাবিব এক্কেবারে নেংটো মেয়েটি ঢোকবার সময়পানাশালাত বেশ ক’জন জোয়ান মর্দ বসে বসে পান করছিল।পান করতে করতে,ওরা মেয়েটির দিকেথু থু থু…করে থুতু ছিটাচ্ছিল।সবে সাগর থেকে উঠে আসা মেয়েটিএসবের কিছুই বুঝতে পারছিল না।মেয়েটি পথ হারানো মাছকন্যা ।টিটকারি…
এঞ্জেলা
– পাবলো নেরুদা অনুবাদ:চয়ন খায়রুল হাবিব আজকে শুয়েছিলাম এক খাটি তরুনির পাশেসাদা সাগরের তিরে জ্বলন্ত তারাদের ঠিক মাঝখানেসব ঘটছিল খুব আস্তে আস্তেটানা সবুজ চাহনিতেঝলসানো আলোতে শুকনো পানির দাগটলটলে গভির গোল্লাছুটের তিব্র আর তাজা আবেগবুকের বোটায় দুটি দুমুখি মশালজ্বলছে খাড়া দুই…
দুপুরের বুকে ঝুকে
– পাবলো নেরুদা অনুবাদ:চয়ন খায়রুল হাবিব দুপুরের বুকে ঝুকে পড়ে বিষন্নতার জাল ছুড়েছিলামতোমার সাগর-নিল চোখের জলেওখানে গনগনে হলকায় আমার একাকিত্ত্ব বাড়েডুবন্তের হাত তড়পায় বানের জলের তোড়েতোমার অন্যমনস্ক চোখে আমি লাল সংকেত পাঠিয়েছিচাহনি দুলেছিল সাগরবেলাতে দাঁড়ানো বাতিঘরেদুরের নারি তুমি কেবল অন্ধকার…
সকাল
– পাবলো নেরুদা অনুবাদ:চয়ন খায়রুল হাবিব একদম উদোম, তুমি তোমার হাতের মতন সাধারনতুলতুলে, সাদামাটা, ছোট্ট, স্বচ্ছ, গোলগাল,চাদের আলোতে, আপেল বাগানেঃএকদম উদোম, গমের দানার মত একহারাএকদম উদোম, তুমি কিউবার রাতের মত নিলচুলজুড়ে আঙ্গুর আর তারাদের ভিড়বেশ খোলামেলা আর হলুদাভগির্জার সোনালি গম্বুজ…
প্রণয়
– পাবলো নেরুদা অনুবাদ: রহমান হেনরী তোমার প্রসঙ্গ উঠে আসে, পুষ্প-ফোটা উদ্যানে উদ্যানেআমি তো আহত হই, বসন্তের সুমিষ্ট সুবাসে।আমি তো গিয়েছি ভুলে ওই মুখ, আজ আর স্মরণে আসে নাসেই হাত দুটি; কীভাবে ও দুটি ঠোঁটআমাকে গিলেছে, নেই মনে।মন গেছে তোমারই…