– গোলাম মোস্তফা আমরা নূতন, আমরা কুঁড়ি, নিখিল বন-নন্দনে,ওষ্ঠে রাঙা হাসির রেখা, জীবন জাগে স্পন্দনে।লক্ষ আশা অন্তরেঘুমিয়ে আছে মন্তরেঘুমিয়ে আছে বুকের ভাষা পাঁপড়ি-পাতার বন্ধনে।সাগর-জলে পাল তুলে দে’ কেউ বা হবো নিরুদ্দেশ,কলম্বাসের মতই বা কেউ পৌঁছে যাবো নূতন দেশ।জাগবে সাড়া বিশ্বময়এই…
Tag: গোলাম মোস্তফা
গোলাম মোস্তফা
গোলাম মোস্তফা (জন্ম: ১৮৯৭ – মৃত্যু: ১৩ অক্টোবর ১৯৬৪) একজন বাঙালি লেখক এবং কবি।তার কাব্যের মূল বিষয় ছিল ইসলাম ও প্রেম।
জন্ম ও পরিবার
গোলাম মোস্তফার জন্ম ১৮৯৭ সালে যশোর জেলার ঝিনাইদহ মহকুমার শৈলকূপা থানার অন্তর্গত মনোহরপুর গ্রামে। পিতা কাজী গোলাম রব্বানী, পিতামহ কাজী গোলাম সরওয়ার। তারা ছিলেন সাহিত্যানুরাগী-ফারসী ও আরবী ভাষায় সুপন্ডিত। তার তিন পুত্রের মাঝে বড়ো ছেলে প্রখ্যাত শিক্ষক মোস্তফা আব্দুল আজীজ দীর্ঘ সময় ধরে ক্যাডেট কলেজে (রাজশাহী ক্যাডেট কলেজ সহ বিভিন্ন ক্যাডেট কলেজে) শিক্ষাকতা করেছেন। দ্বিতীয় ছেলে হলেন বিখ্যাত পাপেটনির্মাতা ও চিত্রশিল্পী মুস্তফা মনোয়ার এবং সাম্প্রতিককালের অস্কারজয়ী বাংলাদেশী নাফিস বিন জাফর তার নাতি।
শিক্ষা জীবন
গোলাম মোস্তফার শিক্ষা জীবনের সূচনা হয় চার বছর বয়সে নিজগৃহে ও পার্শ্ববর্তী দামুকদিয়া গ্রামের পাঠশালায়। কিছুদিন পরে তিনি ফাজিলপুর গ্রামের পাঠশালাতে ভর্তি হন। দু’বছর এই পাঠশালায় বিদ্যা অর্জনের পরে তিনি ভর্তি হলেন শৈলকূপা উচ্চ ইংরেজি স্কুলে। ১৯১৪ সালে এই স্কুল থেকে বিশেষ কৃতিত্বের সাথে তিনি প্রবেশিকা বা ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করেন। ১৯১৬ সালে তিনি দৌলতপুর বি. এল কলেজ থেকে আই. এ এবং ১৯১৮ সালে কলকাতা রিপন কলেজ থেকে বি. এ পাশ করেন। পরে ডেভিড হেয়ার ট্রেনিং কলেজ থেকে ১৯২২ সালে বি. টি ডিগ্রী লাভ করেন।
পেশাগত জীবন
১৯২০ সালে জানুয়ারী মাসে ব্যারাকপুর সরকারি হাই স্কুলের সহকারী শিক্ষক হিসেবে গোলাম মোস্তফার শিক্ষকতা জীবনের সূচনা হয়। ১৯২৪ সালে ব্যারাকপুর হাই স্কুল থেকে তিনি কলকাতা হেয়ার স্কুলে বদলী হন। দীর্ঘদিন এখানে শিক্ষকতা করার পর তিনি কলকাতা মাদ্রাসায় বদলী হন। সেখান থেকে ১৯৩৫ সালে বালিগঞ্জ সরকারি ডিমনেষ্ট্রেশন হাই স্কুলে বদলী হয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদে উন্নীত হন এবং কয়েক বছর পর উক্ত বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদমর্যাদা লাভ করেন। এই বিদ্যালয়ের তিনিই প্রথম মুসলিম প্রধান শিক্ষক। ১৯৪০ সালে তিনি বাঁকুড়া জিলা স্কুলে বদলী হন। শিক্ষকতা জীবনে বিভিন্ন স্কুলে শিক্ষকতা করার পর ১৯৪৬ সালে তিনি ফরিদপুর জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। দীর্ঘ ত্রিশ বছর শিক্ষকতা করার পর ১৯৫০ সালে তিনি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন।
প্রকাশিত গ্রন্থ
কবিতা
- রক্তরাগ
- হাসনাহেনা
- খোশরোজ
- সাহারা
- গুলিস্তান
- বনী আদম(মহাকাব্য)
- কাব্য কাহিনী
- সাহারা
- তারানা ই পাকিস্তান
- বুলবুলিস্তান
- কিশোর
- কবর (বাল্যকালের কবিতা)
জীবনী
- বিশ্বনবী
- মরুদুলাল
উপন্যাস
- রূপের নেশা
- ভাঙাবুক
- এক মন এক প্রান
প্রবন্ধ
- ইসলাম ও কমিউনিজম
- মারু দুলাল
- ইসলাম ও জিহাদ
- আমার চিন্তাধারা
অনুবাদ
- মুসাদ্দাস ই হালি
- কালাম ই ইকবাল
- শিকওয়া ও জওয়াব এ শিকওয়া
- আল কুরআন
- জয় পরাজয় (এখওয়ানুস সাফা)
মৃত্যু
বাংলা সাহিত্যের সাধক কবি গোলাম মোস্তফা তার শেষ জীবনের কয়েক বছর ঢাকা শান্তিনগরস্থ নিজ গৃহে (মোস্তফা মঞ্জিল) অতিবাহিত করেন। বেশ কিছু দিন রোগ যন্ত্রণা ভোগ করার পর কবি ১৯৬৪ সালের ১৩ অক্টোবর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
পুরস্কার
- সিতারা ই ইমতিয়াজ
- প্রেসিডেন্ট মেডেল
প্রার্থনা
– গোলাম মোস্তফা অনন্ত অসীম প্রেমময় তুমিবিচার দিনের স্বামী।যত গুণগান হে চির মহানতোমারি অন্তর্যামী। দ্যুলোক-ভূলোক সবারে ছাড়িয়াতোমারি চরণে পড়ি লুটাইয়াতোমারি সকাশে যাচি হে শকতিতোমারি করুণাকামী। সরল সঠিক পূণ্য পন্থামোদের দাও গো বলি,চালাও সে-পথে যে-পথে তোমারপ্রিয়জন গেছে চলি। যে-পথে তোমার চির-অভিশাপযে-পথে…
জীবন বিনিময়
– গোলাম মোস্তফা বাদশা বাবর কাঁদিয়া ফিরিছে, নিদ নাহি চোখে তাঁর-পুত তাহার হুমায়ুন বুঝি বাঁচে না এবার আর!চারিধারে তার শনায়ে আসিছে মরণ-অন্ধকার। রাজ্যের যত বিজ্ঞ হেকিম করিবাজ দরবেশএসেছে সবাই, দিতেছে বসিয়া ব্যবস্থা সবিশেষ,সেবাযত্নের বিধিবিধানে তু্রটি নাহি এক লেশ। তবু তার…
বনভোজন
– গোলাম মোস্তফা নুরু, পুশি, আয়েশা, শফি সবাই এসেছেআম বাগিচার তলায় যেন তারা হেসেছে।রাঁধুনিদের শখের রাঁধার পড়ে গেছ ধুম,বোশেখ মাসের এই দুপুরে নাইকো কারো ঘুম।বাপ মা তাদের ঘুমিয়ে আছে এই সুবিধা পেয়ে,বনভোজনে মিলেছে আজ দুষ্টু কটি মেয়ে।বসে গেছে সবাই আজি…
শিশুর পণ
– গোলাম মোস্তফা এই করিনু পণমোরা এই করিনু পণফুলের মতো গড়ব মোরামোদের এই জীবন।হাসব মোরা সহজ সুখেগন্ধ রবে লুকিয়ে বুকেমোদের কাছে এলে সবারজুড়িয়ে যাবে মন। নদী যেমন দুই কূলে তারবিলিয়ে চলে জল,ফুটিয়ে তোলে সবার তরেশস্য, ফুল ও ফল।তেমনি করে মোরাও…