__গোবিন্দচন্দ্র দাস ভাওয়াল আমার অস্থিমজ্জাভাওয়াল আমার প্রাণ!তাহার শ্যামল বন, মরকত-নিকেতন,চরে কত পশুপাখী নিশি দিনমান,মহিষ ভল্লুক বাঘ, প্রজ্জ্বলিত হিংসারাগকঙ্করে নখর শৃঙ্গ ক্ষুরে দেয় শাণ।তার সে পিকের ডাকে, জোস্না জমিয়া থাকে,যামিনী মূরছা যায় শ্যামা ধরে তান!খঞ্জন খঞ্জনী নাচে, বনদেবতার কাছে,পাপিয়া দোয়েল করে…
Tag: গোবিন্দচন্দ্র দাস
গোবিন্দচন্দ্র দাস
গোবিন্দচন্দ্র দাস (১৬ জানুয়ারি, ১৮৫৫ – ১ অক্টোবর, ১৯১৮) একজন বাঙালি স্বভাব কবি। তিনি রবীন্দ্রনাথের সমসাময়িক কবিদের মধ্যে একজন। তিনি গাজীপুরের এর অধিবাসী ছিলেন। তাঁর কোনও কোনও কবিতায় পূর্ববঙ্গের স্থানকালের ছাপ আছে।
জন্ম ও শিক্ষাজীবন
১৮৫৫ সালে ঢাকা জেলার ভাওয়ালের জয়দেবপুরে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা রামনাথ দাস। ভাওয়ালরাজ প্রতিষ্ঠিত জয়দেবপুর মাইনর স্কুলে পড়ার পরে তিনি ঢাকা নর্মাল স্কুলে ভর্তি হন। এক বছর পর ঢাকা মেডিক্যাল স্কুলে পড়েন। ভাওয়ালরাজ কালীনারায়ণ তার শিক্ষার ব্যয়নির্বাহ করতেন। তবে অব্যবস্থিত চিত্তের জন্য তিনি সারা জীবন দুঃখভোগ করেছেন।
কর্মজীবন
গোবিন্দ বিভিন্ন স্থানে ও বিভিন্ন ব্যক্তির স্নেহচ্ছায়ায় কাজ করেছেন, আবার ছেড়েও দিয়েছেন। শেষজীবনে মুক্তাগাছার জমিদার জগৎকিশোর আচার্য চৌধুরীর বৃত্তিমাত্র সম্বল ছিল।
সাহিত্যকর্ম
ভাওয়াল রাজপরিবারের আশ্রয়ে থাকাকালীন রাজপরিবারের প্রধান কর্মচারী কালীপ্রসন্ন ঘোষের সঙ্গে বিরাধিতার ফলে তিনি ভাওয়াল থেকে নির্বাসিত হয়েছিলেন। সেই বেদনা ও অপমান তার কাব্যের প্রধান সুর। তার আন্তরিকতা ও স্পষ্টতার জন্য তিনি ‘স্বভাব কবি’আখ্যা পেয়েছেন। যদিও তার রচিত কবিতাবলি ছিল কিন্ত্তে অমার্জিত। পূর্ববঙ্গের প্রকৃতির বর্ণনা, গভীর বাস্তববোধ ও প্রগাঢ পত্নীপ্রেম তার কবিতার বৈশিষ্ট্য। কবিতার মাধ্যমে তিনি প্রথমা পত্নীকে অমর করেছেন। অ্যালেন হিউম রচিত ‘অ্যায়োএক’ কবিতা অনুবাদের জন্য তিনি খ্যাতি অর্জন করেন। ‘স্বদেশ’ কবিতায় শিক্ষিত বিলেতফেরত সমাজকে তীব্র কশাঘাত করেন। কলকাতায় ‘বিভা’পত্রিকার প্রকাশক এবং শেরপুরে ‘চারুবার্তা’ কাগজের অধ্যক্ষ ছিলেন। শেষের দিকে অসুস্থতার জন্য দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ তার চিকিৎসার ব্যয়ভার গ্রহণ করেন। তিনি ১০খানি কাব্যগ্রন্থ রচনা করেছেন। কিছু কবিতা আজও অপ্রকাশিত। গীতার কাব্যানুবাদ তিনি করেছিলেন।
রচনাবলী
কাব্য
- প্রসূন (১৮৭০)
- প্রেম ও ফুল (১২৯৪ বঙ্গাব্দ),
- কুঙ্কুম (১২৯৮ বঙ্গাব্দ)
- কস্ত্তরী (১৩০২ বঙ্গাব্দ)
- চন্দন (১৩০৩ বঙ্গাব্দ)
- ফুলরেণু (১৩০৩ বঙ্গাব্দ)
- মগের মুল্লুক (তার লেখা একটি ব্যঙ্গ কাব্য )।
জন্মভূমি
– গোবিন্দচন্দ্র দাস জননী গো জন্মভূমি তোমারি পবনদিতেছে জীবন মোরে নিশ্বাসে নিশ্বাসে!সুন্দর শশাঙ্কমুখ, উজ্জ্বল তপন,হেরেছি প্রথমে আমি তোমারি আকাশে।ত্যাজিয়ে মায়ের কোল, তোমারি কোলেতেশিখিয়াছি ধূলি‐খেলা, তোমারি ধূলিতে। তোমারি শ্যামল ক্ষেত্র অন্ন করি দানশৈশবের দেহ মোর করেছে বর্ধিত।তোমারি তড়াগ মোর রাখিয়াছে প্রাণ,দিয়ে…