– কামিনী রায় পথে দেখে ঘৃণাভরে কত কেহ গেল সরেউপহাস করি’ কেহ যায় পায়ে ঠেলে ;কেহ বা নিকটে আসি, বরষি সান্ত্বনারাশিব্যথিতেরে ব্যথা দিয়ে যায় শেষে ফেলে ।পতিত মানব তরে নাহি কি গো এ সংসারেএকটি ব্যথিত প্রাণ, দুটি অশ্রুধার ?পথে পড়ে,…
Tag: কামিনী রায়
কামিনী রায়
জন্ম তারিখ | ১২ অক্টোবর ১৮৬৪ |
---|---|
জন্মস্থান | বরিশাল, বাংলাদেশ |
মৃত্যু | ২৭ সেপ্টেম্বর ১৯৩৩ |
কামিনী রায় একজন প্রথিতযশা বাঙালি কবি, সমাজকর্মী এবং নারীবাদী লেখিকা। তিনি ব্রিটিশ ভারতের প্রথম মহিলা স্নাতক ডিগ্রীধারী। কামিনী রায়ের জন্ম বাংলাদেশের বাকেরগঞ্জের (বরিশাল) বাসণ্ডা গ্রামে ১৮৬৪ সালের ১২ অক্টোবরে। তাঁর পিতা চণ্ডীচরণ সেন একজন ব্রাহ্মধর্মাবলম্বী ছিলেন। কামিনী রায়কে বার বৎসর বয়সে স্কুলে ভর্তি করে বোর্ডিংয়ে রেখে পড়ান। ১৮৮০ খ্রীস্টাব্দে তিনি কলকাতা বেথুন স্কুল হতে এন্ট্রান্স (মাধ্যমিক) ও ১৮৮৩ খ্রীস্টাব্দে এফ.এ বা ফার্স্ট আর্টস (উচ্চ মাধ্যমিক সমমানের) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। বেথুন কলেজ হতে তিনি ১৮৮৬ খ্রীস্টাব্দে ভারতের প্রথম নারী হিসাবে সংস্কৃত ভাষায় সম্মানসহ স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন। তিনি বেথুন কলেজের স্কুল বিভাগে শিক্ষীকার পদে নিযুক্ত হন। পরবর্তীকালে তিনি ঐ কলেজে অধ্যাপনাও করেছিলেন। যে যুগে মেয়েদের শিক্ষাগ্রহণ বিরল ঘটনা ছিল, সেই সময়ে কামিনী রায় নারীবাদে বিশ্বাসী ছিলেন। পনেরো বছর বয়সে তাঁর প্রথম কাব্য গ্রন্থ আলো ও ছায়া প্রকাশিত হয় ১৮৮৯ খ্রীস্টাব্দে। গ্রন্থটি প্রকাশিত হলে তার কবিখ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। তার লেখা উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে – আলো ও ছায়া (১৮৮৯), নির্মাল্য (১৮৯১), পৌরাণিকী (১৮৯৭), মাল্য ও নির্মাল্য (১৯১৩), অশোক সঙ্গীত (সনেট সংগ্রহ, ১৯১৪), অম্বা (নাট্যকাব্য, ১৯১৫), দীপ ও ধূপ (১৯২৯), জীবন পথে (১৯৩০) ইত্যাদি। কামিনী রায় সবসময় অন্য সাহিত্যিকদের উৎসাহ দিতেন। ১৯২৩ খ্রীস্টাব্দে তিনি বরিশাল সফরের সময় কবি সুফিয়া কামালকে লেখালেখিতে মনোনিবেশ করতে বলেন। তার কবিতা পড়ে বিমোহিত হয়ে কেদারনাথ রায় তাকে বিয়ে করেন। ১৯০৯ খ্রীস্টাব্দে কামিনী রায়ের স্বামীর অপঘাতে মৃত্যু ঘটেছিল। সেই শোক ও দুঃখ তার ব্যক্তিগত জীবনে ব্যাপক প্রভাব ফেলে, যা তার কবিতায় প্রকাশ পায়। ৬৮ বছর বয়সে ২৭ সেপ্টেম্বর ১৯৩৩ সালে হাজারীবাগ, বিহার (বর্তমানে ঝাড়খণ্ড রাজ্য) ভারতে মৃত্যুবরণ করেন।
এরা যদি জানে
– কামিনী রায় এদেরও তো গড়েছেন নিজে ভগবান্ ,নবরূপে দিয়েছেন চেতনা ও প্রাণ ;সুখে দুঃখে হাঁসে কাঁদে স্নেহে প্রেমে গৃহ বাঁধেবিধে শল্যসম হৃদে ঘৃণা অপমান,জীবন্ত মানুষ এরা মায়ের সন্তান।। এরা যদি আপনারে শেখে সম্মানিতে,এরা দেশ-ভক্ত রূপে জন্মভূমি-হিতেমরণে মানিবে ধর্ম বাক্য…
স্মৃতিচিহ্ন
– কামিনী রায় ওরা ভেবেছিল মনে আপনার নামমনোহর হর্ম্মরূপে বিশাল অক্ষরেইষ্টক প্রস্তরে রচি চিরদিন তরেরেখে যাবে ! মূঢ় ওরা, ব্যর্থ মনস্কাম।প্রস্তর খসিয়াছে ভূমে প্রস্তরের পরে,চারিদিকে ভগ্নস্তূপ, তাহাদের তলেলুপ্ত স্মৃতি ; শুষ্ক তৃণ কাল-নদী-জলেভেসে যায় নামগুলি, কেবা রক্ষা করে!মানব হৃদয় ভুমি…
কত ভালবাসি
– কামিনী রায় জড়ায়ে মায়ের গলা শিশু কহে আসি,-“মা, তোমারে কত ভালোবাসি!”“কত ভালবাস ধন?” জননী শুধায়।“এ-ত।” বলি দুই হাত প্রসারি’ দেখায়। “তুমি মা আমারে ভালবাস কতখানি?”মা বলেন “মাপ তার আমি নাহি জানি।”“তবু কতখানি, বল।” “যতখানি ধরেতোমার মায়ের বুকে।”“নহে তার পরে?”…
পাছে লোকে কিছু বলে
– কামিনী রায় করিতে পারি না কাজসদা ভয় সদা লাজসংশয়ে সংকল্প সদা টলে,-পাছে লোকে কিছু বলে। আড়ালে আড়ালে থাকিনীরবে আপনা ঢাকি,সম্মুখে চরণ নাহি চলেপাছে লোকে কিছু বলে। হৃদয়ে বুদবুদ মতউঠে চিন্তা শুভ্র কত,মিশে যায় হৃদয়ের তলে,পাছে লোকে কিছু বলে। কাঁদে…