– আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ ‘কুমড়ো ফুলে ফুলেনুয়ে পড়েছে লতাটা,সজনে ডাঁটায়ভরে গেছে গাছটা,আর, আমি ডালের বড়িশুকিয়ে রেখেছি—খোকা তুই কবে আসবি!কবে ছুটি?’চিঠিটা তার পকেটে ছিল,ছেঁড়া আর রক্তে ভেজা। ‘মাগো, ওরা বলে,সবার কথা কেড়ে নেবেতোমার কোলে শুয়েগল্প শুনতে দেবে না।বলো, মা, তাই কি…
Tag: আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ
আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ
আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ (৮ ফেব্রুয়ারি, ১৯৩৪ – ১৯ মার্চ, ২০০১)বিংশ শতাব্দীর বাংলাদেশের পঞ্চাশের দশকের একজন মৌলিক কবি। তার পুরো নাম আবু জাফর মুহাম্মদ ওবায়দুল্লাহ খান। তার দুটি দীর্ঘ কবিতা ‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ এবং ‘বৃষ্টি ও সাহসী পুরুষের জন্য প্রার্থনা’ আধুনিক বাংলা সাহিত্যের ভাণ্ডারে অভূতপূর্ব সংযোজন। ব্যক্তি জীবনে তিনি ছিলেন একজন উচ্চপদস্থ সরকারি আমলা। ১৯৮২ সালে তিনি বাংলাদেশ সরকারের কৃষি ও পানি সম্পদ মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। তিনি একুশে পদক লাভ করেছেন।
জন্ম ও শিক্ষা
আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ বরিশাল জেলার এর বাবুগঞ্জের বাহেরচরের ক্ষুদ্রকাঠি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা আব্দুল জব্বার খান পাকিস্তানের আইন পরিষদের স্পিকার ছিলেন। ১৯৪৮ সালে ময়মনসিংহ জিলা স্কুল থেকে মাধ্যমিক, ১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং ১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ থেকে এম.এ. পাস করেন।
পেশা জীবন
১৯৫৪ থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। ১৯৫৪ সালে তিনি ইংরেজিতে মাস্টার্স করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একই বিভাগে প্রভাষক পদে যোগ দেন। ১৯৫৭ সালে অধ্যাপনা পেশা ছেড়ে তিনি যোগ দেন পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসে। ১৯৮২ সালে তিনি সচিব হিসেবে অবসর নেন এবং রাষ্ট্রপতি এরশাদের সরকারে মন্ত্রীসভায় যোগ দেন। কৃষি ও পানি সম্পদ মন্ত্রী হিসেবে দুই বছর দায়িত্ব পালন করে ১৯৮৪ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
সাহিত্যে অবদান
কাব্যের আঙ্গিক গঠনে এবং শব্দ যোজনার বিশিষ্ট কৌশল তার স্বাতন্ত্র্য চিহ্নিত করে। তিনি লোকজ ঐতিহ্যের ব্যবহার করে ছড়ার আঙ্গিকে কবিতা লিখেছেন। প্রকৃতির রূপ ও রঙের বিচিত্রিত ছবিগুলো তার কবিতাকে মাধুর্যমণ্ডিত করেছে।তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলো হলো : কবিতা,
- সাত নরীর হার (১৯৫৫),
- কখনো রং কখনো সুর (১৯৭০),
- কমলের চোখ (১৯৭৪),
- আমি কিংবদন্তির কথা বলছি (১৯৮১),
- সহিষ্ণু প্রতীক্ষা (১৯৮২),
- প্রেমের কবিতা (১৯৮২),
- বৃষ্টি ও সাহসী পুরুষের জন্য প্রার্থনা (১৯৮৩),
- আমার সময় (১৯৮৭),
- নির্বাচিত কবিতা (১৯৯১),
- আমার সকল কথা (১৯৯৩),
- মসৃণ কৃষ্ণ গোলাপ প্রভৃতি।
পুরস্কার
- বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৭৯)
- একুশে পদক (১৯৮৫)৷
আমি কিংবদন্তির কথা বলছি
– আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ আমি আমার পূর্বপুরুষের কথা বলছি।তাঁর করতলে পলিমাটির সৌরভ ছিলতাঁর পিঠে রক্তজবার মত ক্ষত ছিল।তিনি অতিক্রান্ত পাহাড়ের কথা বলতেনঅরণ্য এবং শ্বাপদের কথা বলতেনপতিত জমি আবাদের কথা বলতেনতিনি কবি এবং কবিতার কথা বলতেন।জিহ্বায় উচ্চারিত প্রতিটি সত্য শব্দ কবিতা,কর্ষিত…
একজন প্রবীণ বয়াতি
– আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ মায়ের কাছে সন্তানের অঙ্গীকার, তোমার জন্য কথার ঝুড়ি নিয়ে তবেই না বাড়ি ফিরবো লক্ষী মা, রাগ করো না, মাত্রতো আর কটা দিন। সেদিন সকালের রোদে কৃষ্ণচূড়ার আবির আকাশের চূড়ায় লালঝুটি। সেগুন ফুলের আঘ্রাণ গায়ে মেখে রুপালি…