শাহাদুল চৌধুরী
ডালাস, আমেরিকা।
গল্প: সিঁথি
(১)
প্রতিটি মেয়েদের শরীরের দুটো সিঁথি থাকে। কথাটা আমার না। স্বয়ং বুদ্ধদেব গুহর। উনি জ্ঞানীগুণী লেখক। উনি কি আর না জেনে কথা বলবেন? তবে সমস্যা একটাই। একটি মাত্র সিঁথি দৃশ্যমান। অন্যটির অবস্থান এমন এক জায়গায় যেখানে সাধারণত আলো পৌঁছায় না। সেই অন্ধকারাচ্ছন্ন সুড়ঙ্গপথ দিয়ে বেরিয়ে এসেই আমরা সচরাচর এই পৃথিবীর আলোর মুখ দেখি। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো এই অন্ধকারের সিঁথি যখন আলোর মুখ দেখে তখনই সমস্যার সৃষ্টি হয়। যেমন কিনা হল আজ সকালে,যা আমার এতদিনকার সাজানো গোছানো সংসারটিকে মুহূর্তের মধ্যে কালবৈশাখী ঝড়ের মত তছনছ করে দিয়ে চলে গেল।
(২)
আপনাদের একটা মজার কথা বলি। ধরুন আপনার স্বামী বা স্ত্রী মানুষ হিসেবে খুবই নিম্ন শ্রেণীর। সে প্রায়ই আপনাকে ঠকাচ্ছে, আপনি কিন্তু কোনো প্রমাণ পাচ্ছেন না। তখন কি হবে জানেন? পাঁচটা ইন্দ্রিয়ের বাইরে আপনার যে ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় রয়েছে, আপনি কিন্তু তা দিয়ে ব্যাপারটা অনুভব করবেন। ইংরেজীতে একটা কথা আছে। ”you will smell fish.” আপনি প্রায়ই পঁচা মাছের গন্ধ পাবেন। কিন্তু পঁচা গন্ধের উৎস যে মাছ তা কিন্তু আর খুঁজে পাবেন না। যেমন কিনা আমি পাইনি দীর্ঘদিন। তবে কি, চোরের দশ দিনের পরে ১১তম দিনটি হচ্ছে গৃহস্থের। আজকে আমার সংসারের সেই ১১ নম্বর দিন।
(৩)
গল্পের আরো ভিতরে ঢুকে যাবার আগে এখানে দূর অতীতের কিছু কথা বলার প্রয়োজন রয়েছে। আমার সাথে আমার স্বামীর বিয়ে হয়েছিল সম্বন্ধ করে। আজ থেকে প্রায় এক যুগ আগে।আমাদের দুজনেরই বাবা একই অফিসে চাকরি করতেন। আমার ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষার শেষ দিন বাবা ছেলেটিকে আর তার বাবাকে নিয়ে আমাদের বাসায় আসেন চা খাবার জন্য। তারপরে, উঠ ছুড়ি তোর বিয়ে।
( ৪)
এই পৃথিবীতে হঠাৎ করে কিন্তু কখনো কোন কিছু ঘটেনা।যেকোনো বড় ঘটনা ঘটার আগে একটা ছোট্ট লাল পতাকা কিন্তু আমাদের মনের মাঝে পতপত করে উড়তে থাকে। বিয়ে করে আমি যখন প্রথম আমার শ্বশুর বাড়িতে আসলাম, সে রাতে প্রথম আমি সেই লাল পতাকার অস্তিত্ব অনুভব করেছিলাম। বিয়ের ঝামেলা শেষ করে ওদের বাসায় পৌঁছাতে আমাদের বেশ রাত হয়ে গেল। ওদের বাসার কাজের মেয়েটি হঠাৎ করে বলে উঠলো, “এই কালা বউ দেখার জন্য এত রাত পর্যন্ত জাইগা বইসা ছিলাম? আমরার সোন্দর মিয়া ভাই শেষ পর্যন্ত এই মাইয়া বিয়া কইরা আনছে?”
(৫)
কথা সে মিথ্যা বলে নাই। আমি আসলেই বেশ শ্যামলা। কিন্তু লাল পতাকার উত্তোলন হয়েছিল অন্য কারণে। নতুন বউকে এরকম একটি কথা বলার সাহস সে কোথায় পেল? এটা জানার জন্য আমাকে অবশ্য বেশিদিন অপেক্ষা করতে হয় নাই।
(৬)
আমার শ্বশুরবাড়ি বাড়িটা ২ তলা। এক তলায় আমার শ্বশুর-শাশুড়ি থাকেন। দোতালায় আমার স্বামী থাকতো একেলা। এক তলায় রান্নাঘর রয়েছে। সেখানে পুরো পরিবারের জন্য রান্না বান্না হয়। সিঁড়ি ঘরের মুখে কলাপসিবল গেট রয়েছে। যেখানে দস্তুর মত একজন দারোয়ান বসে থাকে। সে প্রয়োজনে গেটটি বন্ধ করে বাইরে থেকে পুরো বিল্ডিংটিকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। সুতরাং বাইরের কোন মানুষের দোতলায় উঠবার কোন সুযোগ নেই। আর তাই আমরা আমাদের দোতলার দরজা কখনো লাগাতাম না।
মাস দুয়েক পরের কথা। এক সকালে আমি আমার শাশুড়িকে রান্নার সব জোগাড় যন্ত্র করে দিচ্ছিলাম। হঠাৎ করেই উনি বললেন, ”যাও মা এই চাটা তোমার স্বামীকে দিয়ে আসো। সকালে ঘুম ভেঙে বেড টি না পেলে ওর মাথা খারাপ হয়ে যায়।” আমি চা নিয়ে এসে দেখি, আমাদের দোতালাটা বন্ধ। অথচ আমি দরজা খুলে রেখে একতলায় গিয়েছিলাম নাস্তা বানাতে, আমার স্পষ্ট মনে আছে। আমার ধাক্কাতে একসময় এসে ও দরজা খুলে দিল। চা নিয়ে বেডরুমে ঢুকে দেখি আমাদের এটাচড বাথরুমের দরজাটা ঈষৎ ভেজানো। সেখান থেকে কাপড় কাচার থুপথুপ শব্দ আসছে। ভিতরে উঁকি দিয়ে দেখি সেই কাজের মেয়েটা। মেয়েটি দুপুরে বাসায় যখন কেউ থাকে না তখন এসে এই কাপড় কাচার কাজটা করতে পারত। আমার সহজে মেজাজ খারাপ হয় না, কিন্তু এই ঘটনায় মেজাজ খারাপ হয়ে গেল। যদিও আমি তা আমার স্বামীকে বুঝতে দিলাম না।
একটু পরের কথা। ওর খালাতো বোনরা আসলো নতুন বউ দেখতে। এরা গ্রামে থাকে। বিয়ের দিন আসতে পারে নাই। ও দেখি উঠে গিয়ে তাদের জড়িয়ে ধরল। আমাদেরও খালাতো ভাই আছে। আমরা তাদের সাথে যথেষ্ট ফ্রী। কিন্তু কখনো জড়িয়ে ধরিনি। একটা ছেলে যখন একটি মেয়েকে জড়িয়ে ধরে, মেয়েটির শারীরিক গঠনের কারণে দুটো শরীর কথা বলতে শুরু করে। এই ঘটনাটিকে আপনি একজন নতুন বিবাহিত স্ত্রীর কালচারাল শকও বলতে পারেন। আমি পুরোপুরি কথাবার্তা বন্ধ করে দিলাম সেদিনের মত। রাতে ঘুমাতে এসে আমার স্বামী জানতে চাইল,” কি ব্যাপার , তুমি এত গম্ভীর কেন?” আমি তাকে লজ্জায় কাজের মেয়ের ব্যাপারটি বলতে পারলাম না। তবে তার খালাতো বোনদের জড়িয়ে ধরার ব্যাপারটা বললাম। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে ও আমাকে আঘাত করল। আমি সেদিন সাদা রংএর একটি ব্লাউজ পড়েছিলাম। আমার সাদা ব্লাউজ লাল হয়ে গেল নাক থেকে গড়িয়ে পড়া রক্তে। এখানে প্রসঙ্গত আপনাদের আরো একটা কথা বলে রাখি, আপনারা যদি না চান আপনাদের স্বামী বা স্ত্রী আপনার সাথে দূর্ব্যবহার করুক, তবে আপনাদের প্রথম দিনই প্রতিবাদ করতে হবে। না হলে দিন দিন এই অত্যাচারের মাত্রা বাড়তে থাকবে। অনেকটা প্রথম রাতে বিড়াল মারার মতো। যা করার প্রথম ঘটনার পরই করতে হবে। না হলে অপর পক্ষ যে মেসেজটা পাবে তা হলো এরকম করা যায়। আমি ভুক্তভোগী। ভুল করে শিখেছি। আপনারা এই ভুলটা করবেন না।
সে রাত্রে আমি কিছুই করলাম না, সারারাত খালি ভাবলাম কেন একটা রিকশা ওয়ালার সাথে আমার বিয়ে হলো না। আমার বাবা বলেছিল,” বিশ্ববিদ্যালয়ের তুখোড় ছাত্রের সাথে তোর বিয়ে দিলাম। “আমিও দেখেছি কি অসাধারণ বাগ্মী প্রতিভা আমার স্বামীর। ও যখন কথা বলে তখন সেই রুমে আর কেউ কথা বলে না, মন্ত্রমুগ্ধের মতো সবাই ওর কথা শুনে। সেই প্রচন্ড আকর্ষণীয় মানুষটির গভীর রাতের এই রূপ আমাকে বিস্মিত করল। সকালে উঠে যখন নীচে যাচ্ছি রান্না ঘরে শাশুড়িকে সাহায্য করতে, তখন আমাকে বলল “ব্লাউজটা বদলে যাও।” কোন অনুতাপ ছিল না সে কন্ঠে। একটু পরে নীচে রান্নাঘরে নাস্তা খেতে এসে যখন শুনলো, আমি সকালের নাস্তা খাইনি,তখন আমার শাশুড়িকে ওদের আঞ্চলিক ভাষায় বলল ,”লাথি মেরে বের করে দেন!”
(৭)
আমার সেই সকালে এক কাপড়ে শ্বশুরবাড়ি থেকে বের হয়ে আসা উচিত ছিল। কিন্তু আমি তখন জানি আমার শরীরে সন্তানের উপস্থিতি। ব্যাপারটা তখনো ওকে বলিনি। আমার খুব প্রিয় একজন লেখক আছেন, শাহাদুল চৌধুরী। আপনারা অবশ্য ওনাকে চিনবেন না। উনি কেবল অনলাইনে লেখালেখি করেন। উনার একটা গল্প আছে আশঙ্কা। সেখানে উনি বলেছেন, প্রতিটি স্বামী-স্ত্রী হুমায়ুন ফরিদী আর সুবর্ণার মতো উঁচু মানের অভিনেতা অভিনেত্রী। বাচ্চা-কাচ্চা ঘুমানোর পরে যখন দরজা বন্ধ হয়, তখন শিকারি পশুর মত নখগুলো সব বেরিয়ে আসে। আমিও আমার এই কুৎসিত বিবাহিত জীবন কাউকে দেখতে দিলাম না। এমনকি আমার প্রাণ প্রিয় বান্ধবী রীমাকেও না। রীমা আর আমি একসাথে স্কুল কলেজ পাশ করেছি।
ওর আর আমার বন্ধুত্বটা কি পর্যায়ের আপনাদের ছোট্ট একটি উদাহরণ দিলে বুঝতে পারবেন। ও যখন স্কুল বদলে সেন্ট মেরি থেকে খাস্তগীরে ভর্তি হল , তখন আমার বাবা চেয়েছিলেন আমি যেন ইস্পাহানি স্কুলে ভর্তি হই। কিন্তু আমি অনেক কান্নাকাটি করে খাস্তগীরে ভর্তি হয়েছিলাম শুধুমাত্র ওর সাথে থাকবার জন্য। দুটোরই অবস্থান জামাল খান মোড়ে। সুতরাং আমার প্রাত্যহিক জীবনে খুব একটা যে হেরফের হলো তা অবশ্য না। তবু শুধুমাত্র বন্ধুর কারণে কে বাবার ইচ্ছার বিরুদ্ধে অন্য স্কুলে ভর্তি হয় ? তারপরে ও যখন চট্টগ্রাম কলেজে ভর্তি হল, আমি ওর পদাঙ্ক অনুসরণ করলাম। অথচ আমার অন্য কলেজে ভর্তি হওয়ার ইচ্ছা ছিল। এখন যখন পিছনে তাকাই, তখন মনে হয় চন্দনপুর এ কাটানো কলেজের সেই দিনগুলিই ছিল আমার জীবনের সোনালী অধ্যায়। কবিগুরুর মতো লিখতে পারলে, এতদিনে নিশ্চয়ই লিখে ফেলতাম, “দিনগুলি মোর সোনার খাঁচায় রইল না, রইল না, সেই যে আমার নানা রঙের দিনগুলি!” এর পরেই অবশ্য আমাদের দুটি পথ দুদিকে চলে যায়। ও মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়ে আজ সে বিশাল ডাক্তার! আর আমি, চোরের দশ দিন পার করে আজ গৃহস্থের ১১ নাম্বার নম্বর দিনের সম্মুখীন।
(৮)
আমার প্রথম রাতেই বিড়াল মারা উচিত ছিল। অথচ আমি তা না করে ওর সাথে থেকে গিয়েছিলাম শুধুমাত্র একটি কারণে, আর তা হলো আমার অনাগত সন্তানের জন্য। যথাসময়ে ওর জন্ম হলে আমি ওর নাম দিলাম সেতু। আশা এই যে মেয়েটি আমাদের দুজনের মাঝে সেতুবন্ধন এর মত কাজ করবে। মানুষ ভাবে এক আর হয় আরেক। হতাশায় ভরে গেল আমার পুরোটা বিবাহিত জীবন। সেতুর জন্মের সময় আমি ওকে চিনতাম না। কিন্তু সময়ের সাথে বিভিন্ন ঘটনায় আমি আমার স্বামীকে চিনতে পেরেছিলাম। আর তাই আমি আর বাচ্চা নিতে চাই নি।
(৯)
ন্যাড়া বেলতলায় যায় একবার। আমি গেলাম দুবার, কিন্তু ভাগ্য গুনে তা হয়ে গেল তিনবার। কিভাবে তা আপনাদের বলি। একটি মেয়ে সাধারণত একটি পুরো মাসে মাত্র ২৪ ঘন্টা উর্বর থাকে। আপনি যদি সেই সময় টা সেই বিশেষ কাজ থেকে বিরত থাকতে পারেন, তবে আপনি অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভাবস্থা এড়াতে পারবেন। আমি ভেবেছিলাম আমি অংকে খুবই পাকা, কারণ এসএসসি এইচএসসি দুটো পরীক্ষাতেই আমি অংকে খুব ভালো নাম্বার পেয়েছিলাম।বাস্তবে দেখা গেল ঘটনা ভিন্ন। সেতুর জন্মের বহু বছর পর আমি আবার গর্ভবতী হয়ে পড়লাম। আর আমার ভাগ্যদেবী আমাকে একটা বর দিল। আমি এক টিকিটে দুই ছবির মত জমজ সন্তানের জন্ম দিলাম। যারা কখনো জমজ সন্তানের জন্ম দেননি তারা ভাবতেই পারবেন না ব্যাপারটা কত কঠিন। বাচ্চারা মূলত কাঁদে দুটো কারণে। পেটে ক্ষুধা থাকলে অথবা প্রাকৃতিক ডাকে সাড়া দিলে। ধরুন আপনি একটি বাচ্চাকে পেট ভরে খাইয়ে ডায়াপার চেঞ্জ করে দিলেন, অনেক সাধ্য সাধনার পর বাচ্চাটি কে ঘুম পাড়াতে সক্ষম হলেন, তখন দেখবেন অন্য বাচ্চাটি জেগে উঠবে।পুরো প্রক্রিয়াটা আপনাকে তখন দ্বিতীয়বার করতে হবে। মাঝে মাঝে দুটো বাচ্চা আবার একইসাথে কেঁদে উঠে। সে যে কি ভীষণ এক ঝকমারি, তা ভাষায় বর্ণনা করতে পারব না। এমনই এক গভীর রাতে বাচ্চাদের কান্নায় বিরক্ত হয়ে আমার স্বামী আমাকে ফেলে পাশের রুমে থাকার সিদ্ধান্ত নেয় এবং ভবিষ্যতে যেন আমাদের আর বাচ্চাকাচ্চা না হয়, তার জন্য সে এক প্যাকেট কনডম কিনে নিয়ে এসে রাখে তার রুমে। বাচ্চাকাচ্চার ঝামেলায় আমাদের জীবন এমনই ব্যস্ত হয়ে পড়ে যে তা ব্যবহার করার সুযোগ আমাদের জীবনে আসে না। আমি অংকে কাঁচা হতে পারি,কিন্তু আমার হিসাব মতে প্যাকেট এর সবগুলো কনডম অক্ষত থাকার কথা। গতকাল ওর রুম গোছানোর সময় আমি হঠাৎ করে লক্ষ্য করি, প্যাকেটটি খোলা এবং বেশ কয়েকটি কনডম কমে গেছে।অন্য কেউ হলে স্বামী কে ব্যাপারটা জিজ্ঞেস করত। কিন্তু আমি করিনি। কারণ সত্যি জানা মানে আমাকে এ তিনটি বাচ্চা নিয়ে আলাদা হয়ে যেতে হবে, যা আমার পক্ষে অসম্ভব। তবে আপনাদের সেই যে লাল পতাকা টার কথা বলেছিলাম, তা মনের মধ্যে পতপত করে উড়তে থাকলো পুরোটা সময়। এটা এমন একটা ব্যাপার না সহ্য করা যায়, না বলা যায়। এর মাঝেই আজ সকালে সেই সিঁথির বিপত্তিটা ঘটল। আমাদের ঘরগুলো হোস্টেলের মত। একটানা। সবগুলো ঘরের দরজা একটা টানা বারান্দায় এসে শেষ হয়েছে। এই বারান্দায় আমাদের বর্তমান কাজের মেয়েটি ঘুমায়। বারান্দায় কোন বাথরুম নেই। তাই ঘুমাতে যাওয়ার আগে মেয়েটিকে ভিতরের কোন একটি বাথরুম থেকে পেশাব করে আসতে হয়। কাল রাতে মেয়েটি যখন বাথরুম শেষে বের হচ্ছিল, আমি তখন বারান্দায় দাঁড়িয়ে।কাপড় শুকানোর তার থেকে সারাদিন ধরে শুকানো কাপড় গুলো তুলছিলাম। আমার স্পষ্ট মনে আছে মেয়েটি পাজামার ফিতা বাঁধতে বাঁধতে বারান্দায় এসেছিল। যেহেতু রাতে মেয়েটির বাথরুমে যাওয়ার আর কোনো সুযোগ নেই, ফিতাটা এখনো বাধা থাকার কথা। কিন্তু আজ সকালে আমি যখন মেয়েটিকে ঘুম থেকে তুললাম,তখন পাজামাটি গড়িয়ে ওর গোড়ালির কাছে পড়ে গেল। আর অন্ধকারের সে দ্বিতীয় সিঁথিটি আলোর মুখ দেখল। আমি পুরো পরিস্থিতিতে হতবাক হয়ে গেলাম। এমন সোমত্থ বয়সের একটি মেয়ে আমার সামনে উলঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ব্যাপারটা আমি বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না। আমি কিছু বলবার আগেই মেয়েটি পাজামা তুলে আমার পায়ে পড়ে কাঁদতে শুরু করলো। ”খালাম্মা ,আমি সাহেবকে অনেক মানা করছি। কিন্তু উনি কিছুতেই আমার কথা শুনেন নাই।”
(১০)
একটি কালবৈশাখী ঝড় সমুদ্র পার্শ্ববর্তী উপকূলীয় একটি শহরে যতটুকু তান্ডব সৃষ্টি করতে পারে, এই ঘটনাটিও আমার ১২ বছরের সংসারে তেমনি তান্ডব সৃষ্টি করলো! গল্পের শুরুতে আপনাদের শাহাদুল চৌধুরীর একটি গল্পের কথা বলেছিলাম, আসেন গল্প শেষও করি তার আরেকটি গল্পের উদাহরণ টেনে। গল্পটির নাম কর্কট। সেখানে তিনি বয়েলিং ওয়াটার সিনড্রোম বর্ণনা করেছেন এই বলে যে, আপনি যদি একটি ব্যাঙকে ফুটন্ত পানিতে ছেড়ে দেন, তবে ঝাঁপ দিয়ে বাইরে পড়বার আগে, সে চেষ্টা করে তার শরীরের তাপমাত্রা সেই ফুটন্ত পানির সমমানে নিয়ে যাবার, যেন সেই উত্তপ্ত পানিতে সে টিকে থাকতে পারে। এতে তার প্রচণ্ড পরিশ্রম হয়। একসময় ক্লান্ত হয়ে সে ভাবে অনেক হয়েছে, এবার পাত্রের বাইরে ঝাঁপ দিব। কিন্তু প্রচণ্ড পরিশ্রমের কারনে ক্লান্তি এসে ভর করে তার উপর। ব্যাঙটির পক্ষে আর ঝাঁপ দেয়া হয়ে উঠে না। ব্যাঙটির মত আমিও একটা ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। তবে মানুষ হয়ে জন্মানোর অনেক অসুবিধার একটি হলো, আমি চাইলে পাত্রের বাইরে ঝাঁপ দিতে পারব। আমার জন্য পাত্রের বাইরের ঝাঁপ হলো, আমার বান্ধবী রীমাকে একটা টেলিফোন করা। ও অবশ্য খুব বিস্মিত হবে।
(১১)
আমি আমার গল্পের শেষ পর্যায়ে চলে এসেছি। আপনি যখন একজন প্রিয় লেখক এর প্রচুর লেখা পড়বেন, তখন কি হবে, তার একটি প্রভাব আপনার উপর পড়বে। শাহাদুল চৌধুরী তার প্রচুর গল্প শেষ করেছেন একটি প্রশ্ন দিয়ে। পাঠকের হাতে শেষটা ছেড়ে দেন। আমি ঠিক করেছি আমিও তাই করব। আমি যেহেতু মন ঠিক করতে পারছি না, তাই আপনাদের না জিজ্ঞেস করে পারলাম না, ”আপনারা আমার জায়গায় হলে কি করতেন?”
অচিনপুর/ শারমীন সুলতানা ববি।
very informative articles or reviews at this time.
I don’t commonly comment but I gotta tell thankyou for the post on this perfect one : D.
For the reason that the admin of this site is working, no uncertainty very quickly it will be renowned, due to its quality contents.
Great wordpress blog here.. It’s hard to find quality writing like yours these days. I really appreciate people like you! take care
You have noted very interesting points! ps decent web site. “Formal education will make you a living self-education will make you a fortune.” by Jim Rohn.
932164 673395This is the very first time I frequented your website page and so far? I amazed with the analysis you made to make this particular publish extraordinary. 476756
739493 456074Some truly nice and utilitarian information on this web internet site , likewise I feel the design and style holds wonderful capabilities. 148443
This was beautiful Admin. Thank you for your reflections.
Some truly quality articles on this website , saved to favorites.
very informative articles or reviews at this time.
This was beautiful Admin. Thank you for your reflections.
Hi there to all, for the reason that I am genuinely keen of reading this website’s post to be updated on a regular basis. It carries pleasant stuff.
I don’t commonly comment but I gotta tell thankyou for the post on this perfect one : D.
Pretty! This has been a really wonderful post. Many thanks for providing these details.
I appreciate you sharing this blog post. Thanks Again. Cool.
Some truly excellent info , Gladiolus I noticed this.
I think this post makes sense and really helps me, so far I’m still confused, after reading the posts on this website I understand.
798962 174653Deference to op , some superb entropy. 754732
Pretty! This has been a really wonderful post. Many thanks for providing these details.
I carry on listening to the reports speak about getting free online grant applications so I have been looking around for the most excellent site to get one. Could you advise me please, where could i get some?