ফাতোমা তুজ জোহরা
মেডিকেল কলেজ,কুষ্টিয়া।
ধারাবাহিক
লাস্ট ট্রিপ
তিন
সময় যায়,আমিও অভ্যস্ত হয়ে পড়ি এই সবকিছু নিয়ে।
ক্লাস,বন্ধু মানে ব্যাচমেটদের সাথে দারুণ সময় কেটে যায়।
কখনো হয়ত একাডেমিক বিল্ডিং এর করিডোরে বা লেকচার গ্যালারিতে দেখা হয় লুবনার সাথে,প্রতিবার আমি চমকে যাই,কেন নিজেও জানিনা।
লুবনা প্রতিবারই আমাকে দেখে নিজে থেকে আগেই বলে, “শিশির,কেমন আছো? ”
আমি বলি, “ভালো আছি।”তারপর চুপ করে যাই,কিন্তু বুকের মাঝে তখনো কথা ছটফট করে,বলা হয়না।
সামনে কার্ড ফাইনাল, এই নিয়ে চলে ব্যস্ততা। তখন নিজেকে মানুষ মনে হয় না,যেন উন্নত যান্ত্রিক রোবট। এরমাঝেও মনে উঁকি দেয় সপ্রতিভ, সহজাত দুই গভীরতম মায়াভরা চোখ!আমি বুঝতে পারিনা আমার অস্থিরতা।
বাদলের কোন এক শুক্রবার, ক্যান্টিনে সকালের নাস্তা করতে গেছি।বাইরে আকাশ ছাই রঙ,চাপচাপ অন্ধকার।
ক্যান্টিনে দু’একজন আছে।
ছুটির দিনের নাস্তাটা হোস্টেল লাইফে আমার বেশ লাগে,গরম ধোয়া উঠা তেল ছাড়া পরোটা, সাথে ঝাল ঝাল ডিম মামলেট, ঘন মুগ ডাল ভুনা,শেষে এক কাপ চা।আহ!বেশ লাগে।
নাস্তার অর্ডার দিয়ে বসেছি।একা লাগছে আজ,আসিফ বাড়ি গেছে।
ভেজা ছাতা নিয়ে লুবনা ক্যান্টিনে,আমাকে দেখে এগিয়ে এসে আমার টেবিলেই বসল।লুবনাকে একটু ভিন্ন রকম লাগছে আজকে,কেন কে জানে।
“শিশির, বসলাম তোমার সাথে,কিছু মনে করছ না তো?”
“না,কিযে বলেন,কি মনে করব।আপনি ভালো আছেন?”
“হ্যা,উঁহু, না,এইতো আছি।”লুবনার কন্ঠের বিষণ্ণতা স্পষ্ট।
নাস্তা এসেছে।আমি লুবনাকে এগিয়ে দিলাম,
“আপনি নাস্তা করেন।”
“শিশির,তুমি খাবেনা?”
“আমার খাওয়া শেষ,আমি চা খাবো।” কেন যে মিথ্যা বললাম নিজেও জানিনা।
লুবনা নাস্তা করছে চুপচাপ, কেমন প্রাণহীন লাগছে লুবনাকে,আমার ভয়ানক কষ্ট লাগছে দেখে।আমিও নিশ্চুপ দেখছি।
খাওয়া শেষ।
“আপনার কি মন খারাপ?”
লুবনা চকিতে আমার দিকে তাকালো।তার চোখ আদ্র,ঠিক আজকের দিনের আকাশের মত,ছাই রঙ, ধুসর বিষণ্ণতা মাখা,যেন যে কোন সময় টুপটাপ ঝরবে বৃষ্টি!
“শিশির,তোমাকে হয়ত বলা ঠিক না,কেন বলছি জানিনা,আমার মন আজ সত্যিই ভালো নেই।”
“আপনি মন খারাপ করবেন না,হয়ত সব ঠিক হয়ে যাবে।”
“হ্যা হয়ত হবে,তাই যেন হয়।আচ্ছা আমি আসছি।”
লুবনা বিল দিয়ে চলে গেল,ভুলে রেখে গেল ছাতা।
আজ আর আমার সকালের নাস্তা হল না,ইচ্ছেটাও মরে গেছে।
আমি উঠে ছাতা নিয়ে রুমে ফিরলাম।
লেডিস হোস্টেল আর ক্যান্টিন এর মাঝে বেশ খানিকটা সবুজ ঘাসের চত্ত্বর,সিমেন্ট এর ঢালাই রাস্তার একধারে বড়সড় ঝোপ,সবুজ বড় পাতা আর উজ্জ্বল হলুদ রঙ থোকা ফুল ফুটেছে।ক্যান্টিনের মামা বলল,এটা নাকি ঝুনঝুনি গাছ,ফল শুকিয়ে ভিতরের ফল নাড়লে শব্দ হয় ঝুনঝুন করে।সকালের উজ্জ্বল আলোতে ফুলগুলো যেন সোনার মুকুট। আমি সেই ফুলের এক থোকা নিয়ে আর গতদিনের ফেলে আসা ছাতা নিয়ে লেডিস হোস্টেলে কল দিলাম,রুম নং -২০৪!
লুবনাকে আজ আরো বিষণ্ণ লাগছে।
আমাকে দেখে ম্লান হাসি দিল,
“শিশির যে,কি খবর?”
আমি ছাতা এগিয়ে দিলাম।
“অহ,থ্যাংকস, গতকাল ভুলে ফেলে এসেছি।”
আমি অন্য হাতের হলুদ ফুল এবার দিয়ে বললাম, “আপনি মন খারাপ করে থাকলে আপনাকে একটুও মানায় না।”
“বাহ,দারুণ তো, কী ফুল এগুলো?”
“ঝুনঝুনি।”
“তাই,নামটাও বেশ।থ্যাংকস। তুমি কিন্তু এই ক’মাসেই বেশ বড় হয়ে গেছ।”
আমি লজ্জা পেলাম।
“আপনি কি ব্যস্ত?”
“নাহ,কেন বলত?”
“না,এমনিই।আমি আগামীকাল বাড়ি যাচ্ছি।”
“বাহ,বেশ,ঘুরে আসো।”
“কিন্তু….”
“কি?”
“নাহ!আচ্ছা, আপনি…আমি আর কথা খুঁজে পাইনা,সন্ধ্যা নেমেছে,এই ভালো, আমার লজ্জা ঢাকা পড়ে যাক অন্ধকারে!
“শিশির,তুমি কিছু বলবে?কোন সমস্যা?”
আমার অনেক বলার কথা,কিচ্ছু বলতে পারছিনা।
“বাড়িতে গিয়ে আপনার কথা আমার মনে পড়বে।কিন্তু আপনি মন খারাপ করবেন না যেন।আমার তাহলে খুব খারাপ লাগবে।”
লুবনা খুব আর খুব অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।আমি ও দেখছি লুবনাকে,আমার সব জড়তা চলে গেছে বলতে পেরে।
“শিশির,তুমি বিজি না থাকলে চল ক্যান্টিন এ বসে চা খাই।”
“হুম।”
সামনে চা,ক্যান্টিনে দুজন মুখোমুখি।
“শিশির,তুমি এখনো বাচ্চা আছো, আমি তোমার দুই ইয়ার সিনিয়র। আমাদের সমাজে এখনো অনেক পিছিয়ে।আর তাছাড়া…”
এটুকু বলে লুবনা থামলো।
“আর তাছাড়া, আমার বাড়িতে এমনিতেই ঝামেলা চলছে,আমার এইজন্য মন খারাপ।আমার পরিবারের সবকিছু আমার বড় মামা দেখাশোনা করেন,তার ইচ্ছেই সব।আমার পড়ার খরচ ও তিনি দেন।তিনি চাচ্ছেন আমাকে তার পছন্দসই পাত্রে আমাকে পাত্রস্থ করতে।আমার খুব খারাপ সময় যাচ্ছে।”
আমি সব শুনছি। আমার মাথা শূন্য।
“শিশির,তুমি বাড়ি থেকে ঘুরে আসো।”
“আপনি আপনার নিজের ইচ্ছের বিরুদ্ধে যাবেন?এমনকি আমি বললেই বা কেন,যদি আপনার ইচ্ছে না হয়।আপনার মামা চাইলেই হবে কেন।আমার বাবা সবসময় আমাকে বলেন,শিশির,নিজের ইচ্ছের বিরুদ্ধে যেওনা।”
লুবনা হয়ত আমার কথাতে বেশ অবাক।হুট করে হেসে বলল, “বাব্বা,তুমিতো খুব বড় হয়ে গেছ দেখছি।আচ্ছা,আমি মনে রাখবো। নিজের ইচ্ছে!”
লুবনার হাসি আমার মন ভালো করে দিয়েছে।
“আজ আসি,আপনি ভালো থাকবেন,বাড়ি থেকে ফিরে দেখা হবে ইন শা আল্লাহ্।”
“হুম,আল্লাহ্ চাইলে,তুমি ভালো থেকো। চল উঠি।”
লুবনা হোস্টেলে যাবার আগে একবারমাত্র ফিরে হাসি দিলো, যে হাসিতে ছিল আশ্বাস,আমি জানি,আজীবন প্রতীক্ষা করা যায় এমন আশ্বাস!
চলবে…
অচিনপুর.কম/ জীনাতুল কুবরা নিপা
Your article is a great resource for anyone looking to learn more about this topic. I appreciate the way you organized the information and presented it in a clear and easy-to-follow manner.
Your article is a valuable contribution to the conversation on this topic. Thank you for sharing your insights.
141566 677220This douche bag loves his illegal bretheren because hes a itiaen of the world and we ought to be ashamed of ourselves I got news for you Asswipe get your asswiping ass back towards the craphole where you came from with all of your illegal beaners 325953
690793 275174I love meeting utile info, this post has got me even more information! . 114493