আহম্মেদ ইমতিয়াজ নীল
পান্থপথ, ঢাকা।
ধারাবাহিকঃ মিসটেক ( প্রথম পর্ব)
এক.
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থানার আল্লার দরগার আসগার মিয়ার বাড়িতে গত এক সপ্তাহ ধরে শোকের মাতম। এই বাড়ির একমাত্র নাতি, পুকুরের পানিতে ডুবে মারা গেছে, আজ একসপ্তাহ হল। আসগার মিয়া, তার বৌ নাজমা বেগম, বাড়ির কারোরই মন ভালো নেই। নাতিটি যদিও ছিল পালিত, তারপরও সারা বাড়ি ছুটে বেড়াত সবসময়, ছোটখাটো দুস্টুমিতে বাড়ি মাতিয়ে রাখত।
আসগার মিয়া দীর্ঘদিন কুয়েত ছিলেন। বছর চার হল পাকাপাকি ভাবে দেশে চলে এসেছেন।| স্ত্রী নাজমা বেগম পাকা গৃহিনী, বলতে গেলে বাড়ির কর্ত্রী তিনিই, বাড়ির সবকিছু তার কথাতেই চলে। আসগার মিয়ার দুই ছেলে, ছোট আক্কাস ওমান থাকে, এখনও বিয়ে-শাদি করেনি। তার জন্য মেয়ে দেখছেন আসগার মিয়া। অন্যদিকে বড় ছেলে আমিনুলের এটা তৃতীয় স্ত্রী, নাম সুফিয়া। আমিনুলের প্রথম দুই বৌ চলে গেছে বিয়ের মাস ছয়েক এর মধ্যেই, পাড়া-প্রতিবেশীরা ধারণা করেছিল, সুফিয়াও বেশিদিন টিকবে না, কিন্তু ধারণা ভুল প্রমাণ করে সুফিয়া আমিনুলের সংসার করছে প্রায় বছর দুই।
ডুবে মারা যাওয়া নাতিটিকে নাজমা বেগম নিয়ে এসেছিলেন বছর তিন আগে, কুষ্টিয়ার একটা এতিমখানা থেকে, শিশুটির বয়স তখন মাত্র চার বছর ছিল। আমিনুলের দ্বিতীয় স্ত্রী তার কিছুদিন আগে ছেড়ে চলে যায়। এক ফকিরের কাছে গিয়েছিলেন নাজমা বেগম, আমিনুলের বৌ কিভাবে টিকবে সেটা জানতে। ওই ফকিরই পরামর্শ দেয়, এতিম বাচ্চাদের খাওয়ালে আমিনুলের উপর থেকে ফাঁড়া কেটে যাবে, বৌ ও টিকবে। সেই সূত্রেই ওই এতিমখানায় যান নাজমা।
শিশুটিকে যত্ন-আত্তির কোনো রকম ত্রুটি করেননি নাজমা বেগম, আমিনুলও নিজের ছেলের মতোই আদর করত। এর মধ্যে আমিনুলের আবার বিয়ে দিলেন নাজমা, বছর দুই হল, কোনো সন্তান এখনও হয়নি। তাই ওই নাতিটিই ছিল বাড়ির সবার মধ্যমণি।
গত তিনদিন ধরে প্রচন্ড গরম পড়ছে। নাজমা বেগম উঠানের পাশের ঘরটাতে ঘুমান, আগে সাথে নাতি ঘুমাত, এখন একা। মাঝের ঘরের চৌকিতে আসগার মিয়া ঘুমান, আমিনুল তার বৌ নিয়ে ভিতরের ঘরে। একটা ঘর ফাঁকাই পড়ে আছে, আক্কাস বিদেশ থেকে আসলে থাকে, মেহমান আসলে থাকে। একতলা বাড়ি, রান্নাঘর আর টয়লেট বাইরে। পুরো বাড়িটা পাঁচিল দিয়ে ঘেরা। উঠানের এক প্রান্তে টিউবওয়েল আছে, একটু ঘিরে দেয়া আছে, ওই খানেই সবাই গোসল সারে। উঠানে একটা বড় পেয়ারা গাছ, বাড়ির আশেপাশে ও অনেক গাছ লাগিয়েছেন নাজমা বেগম।
ফুলের ছোট্ট একটা বাগান করেছেন বাড়ির সামনে, বড় ছেলে আমিনুল সারের ব্যবসা করে, কুষ্টিয়া শহরে যেতে হয় প্রায়ই, ওই নিয়ে আসে ফুলের চারা।
আজ আবার গরমের সাথে যোগ হয়েছে লোডশেডিং, নাজমা বেগম হাত পাখার বাতাস নিতে নিতে ঘুমিয়ে গিয়েছিলেন। একটু একটু করে রাত গভীর হল, আসগার মিয়ার বাড়ি শুধু না, পুরো পাড়ায় তখন গভীর ঘুমে। রাত্রির নিস্তদ্ধতা ভেদ করে, একটা মোটরসাইকেল এসে থামল আসগার মিয়ার বাসার সামনে। দুইজন আরোহী নামল সেটা থেকে, মুখ গামছা দিয়ে বাঁধা তাদের। নিঃশব্দে পাঁচিল টপকে নাজমা বেগমের ঘরের সামনে দাঁড়াল। একজন পকেট থেকে সরু একটা পেন্সিল টর্চ লাইট বের করল। নাজমা বেগমের ঘরে টর্চ মেরে দেখে নিল তার অবস্থান। অন্যজন পকেট থেকে কিম্ভুত একটা পিস্তল বের করল, নাজমা বেগমের দিকে তাক করে ফায়ার করল কয়েকটা। পুরো পাড়া গুলির শব্দে কেঁপে উঠল, দূরে কোথাও কয়েকটা নেড়ি কুকুর ডেকে উঠল জোরে।আসগার মিয়া, তার ছেলে, ছেলের বৌ ছুটে আসল সবাই, আততায়ীরা ততক্ষণে মোটরসাইকেল করে চম্পট দিয়েছে। আশে পাশের বাড়ি থেকে প্রতিবেশীরাও ছুটে এলেন। পুরো ঘর ভেসে যাচ্ছে নাজমা বেগমের রক্তে। বিছানায় নাজমা বেগমের নিথর দেহ পরে আছে।
দুই.
আদিল দৌলতপুর থানায় এস আই হিসাবে জয়েন করেছে অল্প কয়েকদিন, মাস্টার্স কমপ্লিট করার সাথে সাথেই মিলে যায় চাকরিটা। ইচ্ছা ছিল বিসিএস দিয়ে বড় সরকারি কর্মকর্তা হবে, কিন্তু ফ্যামিলির অবস্থা খুব খারাপ। বাবা নেই, অনেকগুলো ভাই-বোন, আদিল সবার বড়। অল্প কিছু জমিজমা যা আছে তাই দিয়ে কষ্টে চলে সংসার। আদিল ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সময় টিউশনি করে নিজের খরচ নিজেই চালাত, জবটা কোনো ধরাধরি আর টাকা পয়সা ছাড়াই হয়ে গেল, তাই জয়েন করে ফেলেছে। তবে আশা ছাড়েনি, জবের পাশাপশি পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে, প্রিপারেশন নিচ্ছে বিসিএস এর।
আজ থানায় এসেই এএসআই ইমরানের মুখে শুনল খবরটা।
-স্যার, গত রাতে এক বয়স্ক ভদ্রমহিলা খুন হয়েছে, গুলি করে হত্যা, একেবারে স্পট ডেড। ইমরান জানালো।
-গাড়ি বের করতে বলো, ইমরান, ক্রাইমস্পটে যেতে হবে। আদিল বলল।
টেবিল থেকে ক্যাপটা তুলে নিয়ে গাড়িতে উঠে বসল এস আই আদিল খান, এ এস আই ইমরান আর দুই জন কনস্টেবলকে নিয়ে, তার পুলিশের চাকরির প্রথম কোনো খুনের তদন্ত করতে।
আসগার মিয়া একদম ভেঙ্গে পড়েছেন। একসপ্তাহের ব্যবধানে নাতি আর সহধর্মিনীকে হারিয়ে। আদিলকে ইমরান জানাল, খুন হওয়া ভদ্র মহিলার দুই ছেলে। স্বামী বিদেশে থাকত, ছোট ছেলে বিদেশে থাকে এখন, বাড়িতে উনি স্বামী, বড় ছেলে আর তার বৌসহ থাকতেন।
আসগার মিয়ার বড় ছেলে আমিনুলকে ডেকে নিল আদিল।
-বুঝতে পারছি আপনার মনের অবস্থা, কিন্তু তদন্তের স্বার্থে কিছু প্রশ্ন না করলেই নয়, আপনার মায়ের সাথে কি কারোর কোনো শত্রুতা ছিল?
-একদম না স্যার, আমার মা গ্রামের একজন সাধারণ মহিলা, কারো সাথে কোনো শত্রুতা ছিল না।
-আপনার পরিবারের সাথে অন্য কোনো পরিবারের গোলমাল, বা জমি নিয়ে শত্রুটা, এমন কিছু।
-না স্যার।
-ঠিক আছে, আপনি কাল আপনার বাবাকে নিয়ে একবার থানায় আসবেন।
আদিল খান ইমরান কে বলল
-ইমরান, বডি পোস্টমর্টেমের জন্য পাঠাও, আর সবার কাছে খোঁজ-খবর নাও, কেউ খুনীদের চাক্ষুষ দেখেছে কিনা।
পরেরদিন আসগার মিয়া, ছেলে আমিনুল আর আমিনুলের ব্যবসার পার্টনার সায়ীদ থানায় আসল।
আদিল খান ঘুরিয়ে ফিরিয়ে অনেকভাবে প্রশ্ন করল, বের করার চেষ্টা করল, কোনো শত্রু ছিল কিনা এই পরিবারের। তেমন কোনো যুৎসই তথ্য মিলল না।
আদিল ইমরান কে বলল
– ইমরান, সব কিছু দেখে তো মনে হচ্ছে এটা শুধু খুনের কেস, ডাকাতি বা লুটের কোনো উদ্দেশ্য ছিল না। সবার আগে আমাদের খুঁজে বের করতে হবে খুনের মোটিভটা কি ছিল।
-এক্সাক্টলি স্যার, প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসা করেছিলাম। একজন শুধু জানাল দুইজন লোক, গামছা দিয়ে মুখ বাঁধা, মোটরসাইকেল করে চলে যেতে দেখেছে। ইমরান জানাল।
-ইমরান, আমার সাবজেক্ট ছিল পুলিশ সাইন্স আর ক্রিমিনোলজি, একটা জিনিস শিখেছি, যে খুন হয় তার জীবন বৃত্তান্তই অনেক সময় বলে দেয় খুনীর পরিচয়। আমি এই নাজমা বেগমের পুরো জীবন কাহিনী জানতে চাই।
-হয়ে যাবে স্যার, একটা ইন্টারেস্টিং খবর আছে স্যার, আমাদের এক পুরাতন দাগী অপরাধী, কানা মজিদ, চোরাচালান, কিডন্যাপিংসহ আরো অনেক অপরাধের সাথে যুক্ত, কন্টাক্ট এ খুন ও করে শুনেছি, ওকে এক সহযোগী সহ খুনের দিন বিকালে ওই এলাকায় দেখা গেছে। আমাদের একজন ইনফরমার পাক্কা খবর দিয়েছে।
-বলো কি, তাই নাকি ? ভুরু কুঁচকালো আদিল।
নিজের মনের অজান্তেই বলে উঠল
-গ্রামের একটা সাধারণ গৃহবধূর জন্য কনটাক্ট কিলার।
তিন.
পরদিন সকালে ইমরান আদিল কে জানাল
-নাজমা বেগমের প্রতিবেশী এক মহিলা মেয়েসহ এসেছে,আপনার সাথে কথা বলবে।
-ঠিক আছে পাঠিয়ে দাও।
মহিলা মেয়েসহ আদিলের রুমে ঢুকল।
-স্যার, আমার মেয়ে আপনাকে কিছু বলবে। মহিলার কথায় স্থানীয় টান স্পষ্ট।
আদিল মেয়েটিকে দেখল, ১৪-১৫, বছর বয়স হবে হয়তো,
-কি বলবা বলো।
মেয়েটি একটু ইতস্তত করছে দেখে, আদিল মহিলাকে বলল
-আপনি একটু বাহিরে যান।
-নাম কি তোমার? আদিল জিজ্ঞেস করে।
-শেফালী
মেয়েটি উত্তর দেয়।
-শেফালী, যা বলবে বলো, কোনো ভয় নাই, তুমি নাজমা বেগমের কে হও ?
মেয়েটি এইবার সরাসরি আদিলের মুখের দিকে তাকায়
-উনি আমার নানি হন, দূর সম্পর্কের, আর আমিনুলকে মামা ডাকি স্যার, যেদিন আমিনুল মামার ছেলেটি মারা যায়, ওই দিন আমি আর সুফিয়া মামি ওই পুকুরের একটু পিছনে আম গাছে আম পাড়ছিলাম। পানিতে কিছু পড়ার শব্দে দুই জন গাছ থেকে নেমে পুকুরের পাশে যাই। সুফিয়া মামি পানিতে ঝাঁপ দেন।
মেয়েটি দম নেয়ার জন্য একটু থামে।
-স্যার, আমার কেন জানি মনে হয় সুফিয়া মামি ইচ্ছা করলে ছেলেটিকে বাঁচাতে পারতেন।
-কেন তোমার এমনটা মনে হয়।
-স্যার,সুফিয়া মামি অনেক ভালো সাঁতার কাটে। আমরা দুই জন ওই পুকুরে অনেকবার সাঁতারের পাল্লা দিয়েছি, আমি ভালো সাঁতার পারি না। কিন্ত মামি মাছের মতো সাঁতার কাটে।
মেয়েটির কথা শুনে আদিল খানের ভুরুটা কুঁচকে গেল।
-আচ্ছা শেফালী, তোমার কি মনে হয়, তোমার নাজমা নানিকে কে খুন করতে পারে।
-আমি জানি না স্যার, নানি অনেক রাগী ছিলেন, কিন্তু ভালো মানুষ ছিলেন।
-আচ্ছা, তোমার নানির সাথে তোমার সুফিয়া মামির সম্পর্ক কেমন ছিল ?
-ভালো ছিল না স্যার, ঝগড়া হত প্রায়ই।
-তোমার কি মনে হয়, তোমার সুফিয়া মামী নাজমা নানিকে খুন করতে পারে?
-আমার তা মনে হয় না স্যার।
-শেফালী, তোমাকে অনেক ধন্যবাদ, তুমি যেতে পার। দরকার হলে তোমাকে ডেকে নিব।
শেফালীরা চলে যাওয়ার পর, আদিল ইমরানকে ডেকে সব খুলে বলল।
-মেয়েটি ঠিকই বলেছে স্যার, শাশুড়ি-বৌ সম্পর্ক তেমন ভালোছিল না। আমি প্রতিবেশীদের সাথে কথা বলেছি।
-ইমরান, এই সুফিয়া তো এখন মেইন সাসপেক্ট লাগছে। এর পুরো কুন্ডুলী আমার চাই, সেই সাথে ওই পরিবারের সবার মোবাইল ফোনের কল লিস্ট বের কর, দেখ সন্দেহভাজন কিছু মিলে কিনা।
দুইদিন পর সব তথ্য ইমরান আদিলের টেবিলে হাজির করল।
-স্যার আসগার মিয়া আর তার ছেলের কল লিস্টে তেমন কিছু নাই, ওর ছেলে আমিনুল বেশি কথা বলত ওর বিজনেস পার্টনার সায়ীদের সাথে।| সায়ীদ আগে প্রায় রাত্রে ওই বাড়িতে থাকত, সুফিয়া আসার পর আর থাকে না। ইমরান একটু থামল-আর নাজমা বেগম ছিলেন বাড়ির কর্ত্রী, আসগার মিয়াসহ সবাইকে তিনিই শাসন করতেন, তার কথাই ছিল সংসারের শেষ কথা। অনেক বদরাগী ছিলেন, বৌয়ের সাথে খিট খিট করতেন প্রচুর।
-তবে সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হল, সুফিয়া কথা বলত একটা নম্বরে প্রচুর। ওইটা আসগার মিয়ার চাচাতো ভাইয়ের ছেলে রবিউলের নম্বর। আর স্যার, সুফিয়া কিন্তু আমিনুলের তৃতীয় স্ত্রী, ওর প্রথম দুই বৌ টিকেনি বেশিদিন।
-ইন্টারেস্টিং! এক কাজ কর, আগের বৌদের কাছে একটু খোঁজ নাও, কেন তারা চলে গেল। আর ওই রবিউলকে একটু থানায় আসতে বল, ভাবীর প্রতি এতো কেয়ারিং দেবরের মুখটা একটু দেখি।
চার.
রবিউল মাথা নীচু করে বসে আছে আদিলের সামনে |
-রবিউল সাহেব, আমাদের কাছে কিছু লুকাবেন না দয়া করে, আমিনুলের বৌ সুফিয়ার সাথে আপনার কি সম্পর্ক ছিল?
-‘ইয়ে মানে স্যার, দেবর আর ভাবীর সম্পর্ক।
আদিল খুব জোরে ওর টেবিলে ঘুষি মারল।
-এই তুই মনে হয় সত্যি কথা সহজে বলবি না। তোর বিচির উপর রুলের দুই ঘা দিলেই সব সত্যি বের হবে।
রবিউল কাঁদো কাঁদো গলায় বলল-বলছি স্যার, সুফিয়া ভাবীর সাথে আমার সম্পর্ক ছিল, কিন্তু স্যার, নাজমা চাচিকে আমি খুন করিনি।
-সম্পর্ক মানে কেমন সম্পর্ক?
-শারীরিক সম্পর্ক স্যার, এর থেকে বেশি কিছু না।
-এর থেকে বেশি আর কি থাকবে, এখন সত্যি সত্যি বল, নাজমা বেগম কি এই সম্পর্কের ব্যাপারে জানতো ?
-না স্যার জানতো না, তবে স্যার…
-তবে কি?
-স্যার, আমিনুল ভাইয়ের ছেলেটা স্যার, একদিন আমাদের দেখে ফেলেছিল। সুফিয়া ভাবি অবশ্য ওকে বুঝিয়েছে, কাউকে না বলার জন্য।
-আই সি, ঠিক আছে এখন যা, কিন্তু এই কেস শেষ না হওয়া পর্যন্ত শহর ছেড়ে কোথাও যাবি না।
রবিউল বের হয়ে যেতেই ইমরান ঢুকল আদিলের রুমে।
-স্যার আমিনুলের আগের দুই বৌয়ের সাথে কথা বলেছি, তাদের দুইজনেরই একই বক্তব্য, আমিনুল নাকি সেক্সচুয়ালি অ্যাডাল্ট ছিল না। শারীরিকভাবে অক্ষম কারো সাথে সংসার করবে না বলে চলে গেছে।
-হুম, ইমরান তুমি কাল আমিনুলের বৌ সুফিয়াকে থানায় আসতে বলবা, তদন্ত যে দিকে এগোচ্ছে সন্দেহের তীর ওর দিকেই যাচ্ছে। আর ওই কনটাক্ট কিলার কানা মজিদ, ওর কি খবর ?
-স্যার, মজিদ বর্ডার পার হয়ে ইন্ডিয়া তে গা ঢাকা দিয়েছে। সব থানায় ওর ছবি পাঠিয়ে রেড এলার্ট জারি করেছি স্যার, আমাদের সব ইনফর্মারদের বলা আছে, দেশে ঢুকলেই পাকড়াও করব। তবে আমাদের একজন ইনফর্মার পাকা খবর দিয়েছে, ওই বিকালে কানা মজিদ নাকি খুন করার উদ্দেশ্যেই ওই এলাকায় আসে, আর এর জন্য ওকে কেউ সুপারী (টাকা) দিয়েছিল।
-হুম, খুন যে কানা মজিদ করেছে এটা বোঝা যাচ্ছে, কিন্তু ওকে ভাড়া করল কে? আদিল নিজের মনেই বলে উঠে…
-কে এই খুনের আসল মাস্টার মাইন্ড?
চলবে…
অচিনপুর ডেস্ক /জেড.কে. নিপা