পায়ের নিচে ধূসর বা সোনালী বালু, মাঝে মাঝে শামুক-ঝিনুকের দানা, কোথাও কাঁকড়ার মেলা, হিমেল বাতাস, সামনে নীল সাগরের ঢেউ আর গর্জন। এমন কথা মনে আসতেই মন কোথায় যেন হারিয়ে যায়। মনে হয় তখনই ছুটে যাই, নিজেকে ছড়িয়ে দেই, সৈকতের স্রোতের জলে। ঠিক তখন যদি বলা হয়, সৈকতে কোন বালু মিলবে না, মিলবে না শামুক বা ঝিনুক, কাঁকড়ার ঝাঁক, তখন মনটা কিছুটা ম্লান হয়ে যেতেই পারে।
বালুচরে বসে সাগর না দেখলে, কেনইবা যাবো সৈকতে, অথচ সেই সৈকত দেখতেই লাখো মানুষের ভীড় হয়। সে সৈকতে আছে ব্রিজ সাথে ছোট ছোট কটেজ, যেখানে হেঁটে আপনি উপভোগ করতে পারবেন ঘাসের গালিচায় মোড়া সৈকত। আর আছে খাল যেখানে বোটিং করে ঘাসগুলোকে ছুঁতে পারবেন, অপরূপ সে সৌন্দর্যের মাঝে নিজেকে মিলিয়ে দিতে পারবেন। এই সৈকতটির নাম “লাল সমুদ্র সৈকত” বা “রেড সী-বিচ”।
প্রকৃতির বিস্ময় নিয়ে বসে আছে চীনের এই পানজিন রেড বিচ। বিশ্বে লাল সমুদ্রসৈকত হিসেবেও এটি পরিচিত। উত্তর-পূর্ব চীনের লিয়াওনিং প্রদেশের এ সমুদ্র সৈকতটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় ও সংরক্ষিত লাল প্রাকৃতিক জলাশয়। যেখানে বছরের একটা সময় পুরো সৈকত ঢাকা পড়ে লাল রঙে। দুর্লভ সামুদ্রিক ঘাস ‘সুয়েদা সালসা’র কারণে লাল রঙে আবৃত থাকে পুরো সৈকত।
আর দশটা সমুদ্র সৈকতের মতো নয় পানজিন রেড বিচ। কোথাও বালু নেই। কেবল লাল আর লাল। যেন লাল গালিচায় মোড়ানো। পানজিনের এমন রূপ ধরা দেয় শুধু শরতে। অন্যান্য ঋতুতে থাকে সবুজে ঢাকা। মাটিতে অতিরিক্ত লবণের জন্য সুয়েদা সালসা নামে রক্তিম ঘাস ও আগাছা জন্মে এপ্রিল-মে মাসের দিকে। এছাড়া গ্রীষ্মসহ অন্য ঋতুতে থাকে সবুজাভ সামুদ্রিক ঘাসে ভরা।
এটি এশিয়ার সবচেয়ে বড় লাল জলাশয় এই কারণেই এটি চীনদেশের অন্যতম ট্যুরিষ্ট স্পটে পরিণত হয়েছে। এখানে উল্লেখযোগ্য কিছু পাখি পাওয়া যায় যা সত্যিকার অর্থে বিরল। যেমন, লাল মুকুট বক এবং সাউন্ডারস গাল নামের দুটি পাখির আবাসস্থল।
আরিফুর রহমান (সম্পাদক,অচিনপুর.কম)