প্রতিবিম্বঃ শেষ পর্ব(পর্ব ১১)

শারমিন সুলতানা চৌধুরী
নিউ ইস্কাটন, ঢাকা।

হরর উপন্যাস: প্রতিবিম্ব শেষ পর্ব (পর্ব ১১)

-তুই আমাকে বাঁচাবি?
আমি অবাক হয়ে অর্কের দিকে তাকালাম।
-হ্যাঁ।
-কিভাবে?
-আমি জানি না। কিন্তু আমি জানি, আমি অতনুকে ভয় পাই না, অতনু আমাকে ভয় পায়।
-কিন্তু ও অনেক শক্তিশালী।
-জানি, কিন্তু ও আমার চোখের দিকে তাকাতে পারে না।
-কেন?
-তা তো জানি না, বাবা। তবে আমার মনে হয়, আমার দিকে তাকালে ও সব ভুলে যায়।
-মানে?
-মানে! এই যে, ও তোমাদের যা খুশি তাই দেখাতে পারে, আমাকে পারে না। আমার উলটো মনে হয়, ও আমার চোখে কিছু দেখে ভয় পায়।
-আমি তো তোর চোখে কিছু দেখি না।
-তুমি কি মন্দ লোক? নিশ্চয় মন্দ লোকেরা দেখে।
-অর্ক, মাকে ফিরিয়ে আনা দরকার।
-হুম, এজন্য আমাদের বাসায় যেতে হবে।
-না, না! তুই ওখানে যাবি না!
-আমি ছাড়া তুমি এমনিতেও কিছুই করতে পারবে না, বাবা।
-আচ্ছা, চল। কিন্তু তুই স্টাডিতে ঢুকবি না।
-আচ্ছা, আগে চলো তো!

বাসায় ঢুকলাম আমরা।ভেবেছিলাম, দেখবো ধুলো-বালি জমা। কি আশ্চর্য! ঝকঝক করছে মেঝে, কেউ যেন অতিযত্নে প্রতিদিন ঘরের যত্ন নেয়। খাবার টেবিলে রান্না করে ঢেকে রাখা, যেন এইমাত্র কেউ রান্না করেছে।

আমার ভয়টুকু আতংকে পরিণত হলো! অতনু আছে, এখানেই কোথাও। কিন্তু দেখতে পাচ্ছি না কেন? কোন রূপ ধারণ করেছে এবার?

রান্নাঘরে উঁকি দিলাম আমি, রন্টু রাঁধছে…

-মামা, আইসেন? আসেন, অনেকদিন পর আমি রানতেসি।
-তুই কি করে বাসায় ঢুকলি?
-সব ভুইলা গেসে।
বাসার চাবি একটা পাশের বাসায় রাখা থাকে, ভুইলা গেসেন?
-তুই ছিলি কই?
-পলাইসিলাম। আপনি তো আয়নার কথা বিশ্বাস করেন নাই, ভয়ে থাকি নাই। আর আপনি-ই তো যাইতে বললেন।

আমি জানি, আমি বলিনি। বলেছে অতনু, এটাও কি রন্টু-ই কিনা কে জানে।

অর্ক ওর খেলনা গুছিয়ে নিচ্ছে।
এই সুযোগে আমি স্টাডিতে ঢুকলাম।
ব্যালকনি থেকে একটা স্নিগ্ধ বাতাস ভেসে এলো, কেউ গান গাইছে, আমি এগিয়ে গেলাম, শাড়ি পরে এলো চুলে…কে?

আমার দিকে তাকিয়ে হাসলো প্রেমা।
এগিয়ে এসে জড়িয়ে ধরলো।

-অতনু! এমন কেন তুমি?কোথায় চলে গিয়েছিলে?

আমি হতভম্ব হয়ে গেলাম,
কি বলছে প্রেমা এসব! আমাকে অতনু ডাকছে কেন?

-উফ, বলো না। অফিসেও বলে যাওনি।
-অফিস জানতো।
-ওরা তো বলেনি এমন। আর আমার ছেলেকে কোথায় নিয়েছিলে?
-শামার বাসায়।
-অহ! আমাকে না বলে কেন নিয়েছো? তোমাদের ছাড়া বুঝি থাকতে পারি আমি?

প্রেমা এভাবে কথা বলছে কেন? ও অনেক ব্যাক্তিত্ববান একজন মানুষ, এভাবে কথা বলার তো কথা নয়।

-অর্ক কই এখন? বাসায় এসছে?
-হুম।
-নিয়ে এসো তো।
-তুমি যাও। রন্টু দেখলাম রান্না করেছে।
-যাও না, অর্ককে এ রুমে নিয়ে আসো। ব্যালকনির ফুলগুলো দেখাই।

আমি অর্ককে ডাকতে গেলাম। রন্টু দেখলাম টেবিলে খাবারগুলো সাজিয়ে দিচ্ছে আবারও। আমি ওর দিকে ভালোভাবে তাকালাম, রন্টু আমায় দেখেনি।

ও গভীর মনোযোগ দিয়ে নিজের আংগুলগুলো দেখছে। ফুলদানী থেকে বাসী ফুলগুলো ফেলে দিলো, ডাইনিং থেকে হাতটা দশ ফুট বাড়িয়ে একপাশে রাখা বিনে! নিজের আঙুলগুলো কামড় দিয়ে কেটে ফুলদানীতে সাজিয়ে রাখলো, রক্ত ঝরছে কাটা আংগুল থেকে।

আমি বুঝে গেলাম সব! ঝড়ের বেগে স্টাডিতে ঢুকলাম। প্রেমা গভীর মনোযোগে আয়নাতে কি যেন দেখছে।

প্রেমা আঙুল দিয়ে স্পর্শ করলো আয়না…ও পাশ থেকে আরেকটা আঙুল এই প্রেমার আংগুল স্পর্শ করলো।

আমার জগতের প্রেমাটাও পাশের মানুষটাকে টেনে সামনে আনলো।

প্রচন্ড যন্ত্রণায় ছটফট করছে মানুষটা।

আমি আরেকটু এগিয়ে গেলাম।
আতংকে পিছিয়ে এলাম আমি।

ছটফট করতে থাকা মানুষটাও প্রেমা…কিংবা ওর প্রতিবিম্ব!

আমার দিকে তাকিয়ে হাসলো পাশে থাকা প্রেমা।

-তো? অয়ন? এবার অর্ককে একটু ডেকে আনতে হয় যে!
খেলা যে শেষ হয়ে এলো!
আয়নার ওপাশ থেকে যন্ত্রণায় ছটফট করছে প্রেমা, নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে যেন ওর, ঠোঁট দুটো নীলচে হয়ে গেছে।

এ পাশ থেকে প্রেমা বিদ্রুপের হাসি হাসলো।
-কি? অয়ন, আমি তো কোন ছবি দেখাচ্ছি না তোমাকে।ছেলেকে ডাকো।
-কখনোই না, অর্ক এসবের বাইরে থাকবে।

প্রেমার গলায় আঙ্গুলগুলো আরো চেপে বসলো।

-আমি তো তোমাকে অপশন দিচ্ছি না, অয়ন। তোমার তো সেই সুযোগ নেই। অর্ককে ডাকো।
-আমার জীবন থাকতে না।
-হা হা হা! তোমার জীবনের কি মূল্য! তোমাকে কত খুঁজে আমি বের করেছি, জানো? আয়নার ওপারের জগতের মানুষ তুমি, কলকাতার সল্টলেকের ব্যবসায়ী পরিবার। বাঁচা গেছে, তোমার কেউ নেই, অকৃতদার। বাবা-মা দুজনেই অনেক আগেই গত হয়েছেন, আচ্ছা, তুমিও তাদের আমার মতো করে মেরে ফেলোনি তো?

আমি হতবাক হয়ে তাকিয়ে আছি। অতনু প্রেমার হাতটা পিছনে টেনে দুমড়ে-মুচড়ে দিলো। আমি ওকে আটকাতে গেলাম, কি অসুরের মতো শক্তি ওর! ছিটকে পড়ে গেলাম আমি।

-কেন ছেলেমানুষি করছো, অয়ন? সেই শক্তি তোমার থাকলে আমি কখনোই তোমাকে ডাকতাম না, আমি ভালো করেই জানি, তুমি পারবে না আমার সাথে। যা দেখাবো, তাই দেখবে! মুশকিল এটাই, তুমি মানুষ! আমার মতো হতে, প্রেমাকে ভালোবেসে ফেলতে না, অর্ককে নিজের ছেলে ভাবতে না!

-তুমি ওদের ছেড়ে দাও! আমাকে নিয়ে যাও!
-কি হাস্যকর! তোমাকে নিয়ে আমি কি করবো? আসলে প্রেমাকেও আমার দরকার নেই। অর্ককে প্রয়োজন, ওর অস্বাভাবিক ক্ষমতাটা আমার চাই। ওকে আমি বশ করতে পারি না, সেই ওর জন্মের পর,৩ মাস বয়সে যখন ও প্রথম আমার দিকে তাকিয়েছিলো স্পষ্ট করে, আমি সেই তখন থেকে ওর চোখের দিকে তাকাতে পারি না। ও সব জেনে যায়। ও বেঁচে থাকলে, আমার কাছাকাছি থাকলে, আমি বাস্তব, পরাবাস্তব দুজগতকেই নিজের করে নিতে পারবো না।
-অর্ক খুব ছোট একটা বাচ্চা। ও তোমার কি ক্ষতি করবে? ওকে কিছু করো না।

-তোমার কোন ধারণা নেই, অর্ক কতটুকু পারে, ও চাইলে আমাকে ধ্বংস করে দিতে পারে। আর কিভাবে ও আমাকে এত দূর্বল করে দিতে পারে, অক্ষম করে দিতে পারে, আমি জানি না।
জেদে কাঁপছে অতনু!

প্রচণ্ড যন্ত্রণার মধ্যেও হাসলো প্রেমা, দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে ওকে বেঁধে রেখেছে অতনু!

-অর্ক পারে, অর্ক তোমাকে এক নিমিষেই ধ্বংস করতে পারে।কেন জানো? ওর মধ্যে ঈশ্বর ক্ষমতা দিয়েছেন। সব শিশুকেই দেন, তোমাকেও দিয়েছিলেন, তুমি সেই ক্ষমতা ধারণ করতে পারোনি।
-এজন্যই তোমাকে ধরে এনেছি। ছেলেকে খুব ভালো চেনো তুমি। তোমার কথায় ও না এসে পারবে না!
অতনু হাসলো…
-আর ও তোমার সামনে আসলে, হেরে যাবে তুমি। তোমার সমস্ত দম্ভ বাতাসে মিলিয়ে যাবে।
-না, প্রেমা। আমি এখন অনেক শক্তিশালী। আগে তো অয়ন যে জগৎটায় থাকতো, আমি সেখানে যেতে পারতাম না, এখন দেখো, আমার অবাধ বিচরণ!
আমি চুপচাপ শুনে যাচ্ছি ওদের কথোপকথন! বুঝতে পারছি না, এই অক্ষম আমি কিভাবে বাঁচিয়ে আনবো প্রেমাকে। আচ্ছা, অর্ক কি বাঁচাতে পারবে? কিন্তু প্রেমার কথায় বুঝতে পারছি, অর্ক খুব সাধারণ একটা শিশু। অতনু ওকে ভয় পায়, পৃথিবীর সব হিংস্র মানুষদের মতো! শিশুর সারল্য যে ওদের কুটিল মনকে সবার সামনে প্রকাশ করে দেয়!

আমার এই ভাবনার মাঝে দেখি অতনু দরজার দিকে তাকাচ্ছে, মুহুর্তে ওর মুখ রক্তশুন্য হয়ে গেলো যেন!

অর্ক ঢুকলো রুমে, এতটুকু ভয় নেই চোখে ওর!

আমার দিকে তাকালো না, তাকিয়ে আছে সরাসরি অতনুর দিকে।

অতনু আয়নার ওপারে চলে গেলো। কিন্তু অতনু কেন ওর চোখের দিকে তাকাতে পারছে না?
একটা শিশুর সারল্যের দৃষ্টি!
অর্ক সরাসরি আয়নার দিকে এগিয়ে গেলো।
আমি ওকে বাঁধা দিলাম, ও গ্রাহ্যই করলো না।

অতনু এখন প্রেমাকে পেছন থেকে ধরে আছে, অতনুর একটা হাত প্রেমার গলা প্যাঁচিয়ে আছে।

আমি চিৎকার করে বললাম
-অতনু, এই খেলা বন্ধ করো। ওরা তোমার।

অট্টহাসিতে চারদিকে যেন ভেঙ্গে পড়ছে, অতনুর পেছন থেকে সারিবদ্ধভাবে অনেকেই এগিয়ে আসছে, আমি চিনি এদের!
রন্টু, শামা, অতনুর বাবা-মা, অতসী…এরাই কয়েকটা করে আসছে পাশাপাশি! আমাকে এসব ভয় কেন দেখাচ্ছে? কিন্তু অর্ক ছোট মানুষ, ও তো ভয় পাবে!

আয়নার ওপাশটায় বিশাল একটা অগ্নিকুণ্ড! সেখানে কি যেন ফেলছে ওরা, দেখে আমার গা গুলিয়ে উঠলো, মানুষের শরীরের অংশ!

আমি অর্কের চোখ ঢেকে দিলাম।
অর্ক আমাকে সরিয়ে দিলো।

-অতনু, এসব বন্ধ করো। আমাকে এসব দেখিয়ে লাভ নাই, আমি এসব দেখছি না, কারণ আমি জানি, তুমি এসব দেখাচ্ছো।

আমি অর্কের সাহস দেখে অবাক হয়ে গেলাম।

-অতনু, তোমার লড়াই আমার সাথে! তুমি অয়ন আর মাকে ছেড়ে দাও।

অতনু এবার একটু সামনে এগিয়ে এলো।
-তাহলে তুমি আয়নার এ পাশে এসো।

হা হা হা করে হাসলো অর্ক। অপার্থিব হাসি!

-তুমি আয়নার যে পাশেই থাকো না কেন আমার কাছে হেরে যাবে। আমি আসছি, মাকে তুমি ছেড়ে দাও।

-না, তুই আসবি না, অর্ক! মা বলছি, তুই আসবি না!
প্রেমা অসহ্য যন্ত্রণার মধ্যেও চিৎকার করে যাচ্ছে।
-মা, আমাকে আসতে দাও! অতনু আমার কিছুই করতে পারবে না, তুমি জানো, মন্দ কখনো জিততে পারে না।
-তুই পারবি না! অর্ক, ফিরে যা!আমার একটাই রাজপুত্র! অর্ক একটাই! ফিরে যা!

অর্ক আয়নাতে আঙ্গুল স্পর্শ করলো! অতনু এগিয়ে এলো ওর দিকে।

অতনুর পেছনে বাকি মানুষগুলোও হাত বাড়ালো আয়নার ওপাশের জগতের নতুন মানুষটার দিকে।

আমি অর্কের দিকে তাকালাম।
এতটা সাহসী, মাকে বাঁচাতে ও নিজের পরোয়া করছে না।

সত্যের উপর এত বিশ্বাস! ও জানে মিথ্যে, মন্দ হেরে যাবে।

জীবনটা রূপকথা নয়!

প্রেমা চিৎকার করে আমাকে ডাকলো।

-অয়ন! আমার অর্ককে বাঁচাও।

আমি অসহায়ের মতো একবার অতনুকে, একবার অর্ককে দেখছি!

অতনু একহাতে প্রেমার গলা ধরে আছে, অর্ককে ভয় দেখিয়েই যাচ্ছে!

-অয়ন, অতনুকে অর্ককে স্পর্শ করতে দিও না। ও যেন অর্ককে ছুঁতে না পারে।

অর্ক আয়না ছুঁয়ে আছে। আর হয়তো কয়েকটা মুহূর্ত! এরপরই অতনু অর্ককে…

-অর্ক, ফিরে আয়। মাকে আমি নিয়ে আসবো!
শেষবার চেষ্টা করলাম।

ও কারো দিকেই তাকাচ্ছে না, একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে অতনুর দিকে।

কি আশ্চর্য! অতনু ওর চোখের দিকে তাকাতে পারছে না।

-আমি তোমাকে এ জগতে ফিরতে দিবো না, অতনু! তোমার খেলা শেষ!

আমি অবাক হয়ে অর্ককে দেখছি।

অতনু এবার বাঁকা হাসি হাসলো। প্রেমার গলাটা দুহাতে চেপে ধরলো
-এবার?
-আমি বলেছি, এই জগত তোমার কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হবে! তুমি ফিরতে পারবে না।

-তোর মাও তাহলে…
প্রেমা হাসলো।

আমি অবাক, ও এমন অপ্রকৃতস্থের মতো হাসছে কেন?

তীব্র যন্ত্রণা নিয়ে শেষ কয়েকটা নিঃশ্বাসের মাঝে প্রেমা অতনুকে জিজ্ঞেস করলো
-অতনু, তুমি জানো, সবচেয়ে শক্তিশালী কে এখানে?

অতনু প্রেমার দুহাত ভেঙে দিলো
-আরো প্রমাণ চাও?
-নাহ! প্রমাণ দিবো।
খিলখিল করে হাসলো প্রেমা..

আমি কিছুই বুঝতে পারছি না।

প্রেমা তার অন্তরের সবটুকু ভালোবাসা নিয়ে সন্তানের দিকে তাকিয়ে আছে।
এবার হাসলো শেষবারের মতো।

-অয়ন! অতনুকে ফিরতে দিও না, তুমি জানো, কি করতে হবে।

আমার বুকের ভেতরটা শূন্য হয়ে গেলো
-না, তোমাকে ফিরতে হবে।

-না, অয়ন! অতনুকে বুঝিয়ে দাও, সবচেয়ে শক্তিশালী কে?আমাদের অর্ককে বাঁচাও!

হাত দুটো দুমড়ে-মুচড়ে ভেঙে যাওয়া, শেষ নিঃশ্বাস নেওয়া মায়ের অনুরোধ আমি ফিরিয়ে দিবো কিভাবে?

কি অসীম সাহসী! আমার দিকে তাকিয়ে হাসছে প্রেমা।

আমি পাশে পড়ে থাকা ভারী মূর্তিটা তুলে নিলাম।

প্রেমার দিকে শেষবারের মতো তাকালাম।

প্রেমা হাসছে, যে হাসিটার অপেক্ষা আমার হয়তো আর কখনোই ফুরোবে না!

অতনু বিষ্ফোরিত দৃষ্টিতে তাকালো আমার দিকে।

বুঝে গেছে আমি কি করতে চাইছি।

এবার আমি হাসলাম।

সর্বশক্তি দিয়ে আঘাত করলাম আয়নাটাকে।

অতনুর প্রচণ্ড চিৎকার শুনলাম না আমি…
কেন জানি প্রচণ্ড সাহসী মেয়েটার শেষ দৃষ্টিটুকুই…

অর্কটা প্রতিদিন সকালে উঠে একবার বলে
-বাবা, আজ স্কুল না যাই! চলো, আজ গল্পের দিন।

মাঝে মাঝে আমিও অফিস পালাই! অর্ককে নিয়ে আমি অনেক দূরে হারিয়ে যাই, আমরা অনেক গল্প করি।
আমি অয়ন, আমিই অর্কের বাবা!
আমরা কিন্তু দুজন নই!
সাথে আরেকজন থাকে।
রক্তমাংসের মানুষ না হোক, অসীম সাহসী মানুষটাকে আমরা অন্তরে ধারণ করি..

আমার আর অর্কের প্রায় তর্ক হয়, খেলতে গেলে বা ভিডিও গেমসে।
-জিতলো কে?

আমরা দুজনেই জানি, কে জিতে যায়!
আমাদের দুজনের প্রতিবিম্ব একজনই, প্রেমা!
আমি অয়ন! নাম না জানা, সবার অজানা!

হয়তো শুধুই প্রতিবিম্ব!

(সমাপ্ত)

(প্রতিবিম্ব আমার লেখা প্রথম থ্রিলার, চেষ্টা করেছিলাম তাই সবার মতামত চাইছি)।

https://ochinpurexpress.com/%e0%a6%ae%e0%a6%a8%e0%a7%8b%e0%a6%a8%e0%a7%80%e0%a6%a4/%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%a4%e0%a6%bf%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%ae%e0%a7%8d%e0%a6%ac-%e0%a6%aa%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%ac-%e0%a7%a7%e0%a7%a6/

অচিনপুর ডেস্ক /এসএসববি

Post navigation