আম্বিলিকাল কর্ড

শাহাদুল চৌধুরী
ডালাস, টেক্সাস, ইউএসএ

ছোটগল্প: আম্বিলিকাল কর্ড
(আরেকবার বললে খাব এবং চিঠি, গল্প দুটোর শেষ পর্ব)

(১)
আমার বাবার সাথে আমার সুখস্মৃতি খুব একটা বেশি নাই। খুব ছোটবেলায় আমার বাবার আমার মায়ের সাথে বিচ্ছেদ হবার আগে আমরা যখন সবাই একসাথে থাকতাম, তখন বাবা একটা খুব মজার কাজ করতো। রাতে খাবার পরে ঝুল বারান্দায় বসে আমাকে অদ্ভুত সুন্দর কিছু গল্প শোনাত। যার মধ্যে একটি ছিল, “how much land does a man require?”
সেদিন সেই আট বছর বয়সে, আমি প্রথম যখন সে গল্পটা শুনি, তার তাৎপর্য আমি ঠিক বুঝতে পারিনি। আজ বাবার সিমেন্টের কফিনটা একটা ফর্ক লিফট থেকে শিকল বাঁধা অবস্থায় যখন হেলতে-দুলতে মাটির থেকে ছয় ফুট নিচে নেমে গেল, তখন আমি প্রথম অনুভব করলাম আমার বাবা আজ থেকে প্রায় দুই যুগ আগে কি বলতে চেয়েছিলেন। আমরা সারাটা জীবন দৌড়াতে থাকি, কিন্তু শেষমেশ মাটির থেকে ছয় ফুট নিচে মাত্র সাড়ে তিন হাত জায়গা, এটুকুই আমাদের প্রয়োজন পড়ে। বাকি সবই বাহুল্য। খুব কম মানুষই ব্যাপারটা জীবদ্দশায় বুঝতে পারে। কিন্তু যারা পারে তারা একটা সম্পূর্ণ জীবন কাটিয়ে যায়। আমার বাবা ছিলেন সেইসব হাতে গোনা মানুষদের একজন। আমি যখন ফিউনোরাল হোমে তার লাশটা শেষবারের মত দেখছিলাম, কি এক তৃপ্তির হাসি লেগে রয়েছিল তার ঠোঁটের কোণায়।
(২)
আমার বাবার জন্ম হয়েছিল এখান থেকে প্রায় ১৪ হাজার মাইল দূরে ঢাকার অদূরবর্তী একটা ছোট্ট সুন্দর গ্রাম ডোহড়িতে, তার মামাবাড়িতে আজ থেকে প্রায় ছয় দশক আগে। মানুষ মারা যাবার আগে তার মাতৃভূমি এক অদ্ভুত ভাষায় তাকে ডাকে। আমার বাবার বেলায়ও এর ব্যতিক্রম হয়নি। না হলে গতবছর গ্রীষ্মকালে তিনি কেন হঠাৎ করে ডোহরি যাবার জন্য পাগল হয়ে উঠবেন?
(৩)
এক সময় ঢাকা থেকে ডোহরি যাওয়া সারাদিনের ব্যাপার ছিল। বাবার কাছে শুনেছিলাম সকাল বেলা রওনা দিলে অনেকগুলো যানবাহন বদলে সন্ধ্যার মুখে গ্রামটিতে পৌঁছানো যেত। কিন্তু যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির কারণে এখন অবস্থা পাল্টেছে। গত গ্রীষ্মে আমি আর বাবা যখন ডোহরিতে পৌঁছলাম তখন মধ্যদুপুর। তার মামার বাড়ির আর কেউ সেখানে থাকে না। তারা একটি নিঃসন্তান দম্পতিকে দায়িত্ব দিয়ে গিয়েছে বাড়িটি দেখাশুনা করবার। আমাদের পরিচয় পেয়ে কেয়ারটেকার লোকটি তখনই গামছা বেঁধে ডাব গাছে উঠে গেল ডাব পাড়বার জন্য। আমি লোকটির স্ত্রীর সাথে বাড়িটি ঘুরে ঘুরে দেখছিলাম। বাড়ির পিছনে একটা বেশ বড় বারান্দা। সেখান থেকে সিঁড়ি নেমে গিয়েছে বিশাল এক পুকুরের দিকে। বারান্দাটিতে হরেক রকমের আচার রোদে দেওয়া ছিল। আমি সেগুলোর দিকে লোলুপ দৃষ্টিতে তাকালে ভদ্রমহিলা বললেন,
আপনার যেটা ইচ্ছা খান। এইগুলা আপনাদের আম গাছের আম দিয়েই বানানো।
(৪)
আচার নিয়ে আমার একটা বদনাম রয়েছে। আমি যখন কোন বোতল ধরি এক বসায় সেটা শেষ করি। তাই আমি যে আচারের বোতলটিতে সবচাইতে কম রয়েছে সেটি তুলে নিলাম। বোতলটি ছিল হরলিক্সের খালি হয়ে যাওয়া একটি বোতল। আমি সেটিকে পুনরায় খালি করে সিঁড়ি বেয়ে নীচের পুকুরের পানির কাছে পৌঁছলাম। পুকুরের পানিতে বোতলটি ধুয়ে আমি পুকুর পাড়ের কিছুটা নরম মাটি দিয়ে বোতলটি ভরে ফেললাম। আশা ছিল এই, যে বাবার পরের জন্মদিনে আমি মাটিটুকু বাবাকে উপহার দিব। তখন কি আমি জানতাম আমেরিকায় ফিরেই বাবার শরীরে মরণব্যাধি ধরা পড়বে, পরের জন্মদিন তার আর দেখা হবে না?
(৫)
আমি যখন বাবার জন্মদিনের উপহার তার কবরের উপর ছিটিয়ে দিচ্ছিলাম, তখন ফর্ক লিফটটি চালাচ্ছিল যে শ্রমিকটি, সে অপার বিস্ময়ে চেয়েছিল আমার দিকে। আমি নিশ্চিত এ জীবনে সে বহু মানুষকে কবরে নামিয়েছে, কিন্তু কখনোই এই দৃশ্যের সম্মুখীন হতে হয়নি। পুরোটা মাটি কবরে ছিটিয়ে হরলিক্সের বোতলটি খালি হওয়ার পর আমি যে কাজটা করলাম তার জন্য লোকটি মোটেই প্রস্তুত ছিল না। কবর খোদার কারণে যে কিছু কাঁচা মাটি এদিক-ওদিক পড়েছিল তার কিছুটা তুলে আমি আবার আমার হরলিক্সের বোতলটি ভরে ফেললাম। আমার এই ধরনের আচরণে লোকটি সম্ভবত আমাকে পুরোপুরি পাগল ভাবছে, তাতে অবশ্য আমার কিছুই যায় আসে না। আজকের পর এই জীবনে আমার মনে হয় না এই লোকটির সাথে আমার আর দেখা হবে।৷ তবে এই মাটিটুকু নেওয়া আমার জন্য জরুরী ছিল।
(৬)
আমি যেমন আমার বাবার জন্য তার মাতৃভূমির মাটি নিয়ে এসেছিলাম, তেমনি আমার বাবার কবর হল যে শহরে কাকতালীয়ভাবে সেটি আমার জন্মস্থান। আমিও ঠিক আমার বাবার মতো আমার জন্মস্থান পিছনে ফেলে অনেক দূরে চলে যাবার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমার যখন যাবার সময় হবে, তখন যেন এই মাটির জন্য আমার পেট না পোড়ায়, তাই এই ব্যবস্থা।
(৭)
এমনিতে সানগ্লাস পরা মানুষ আমার খুব অপছন্দের। ঘোলা কাচের কারণে চোখ দুটো দেখা যায় না। মানুষের চোখের দিকে না তাকিয়ে আমি কথা বলতে পারি না। আমি যখন বাবার শেষকৃত্য সম্পন্ন করে লিমোজিন এ ফেরত আসলাম, পুরোটা চোখ বড় কালো চশমায় ঢেকে আমার মা তখন সেখানে বসে ছিল। আমি মাকে সানগ্লাসটা খুলতে বললাম,
-চোখ না দেখতে পারলে আমি কথা বলতে পারি না। তুমি কি একটু চশমাটা খুলবে? আমার তোমার সাথে কিছু কথা ছিল।

-আমারও তোর সাথে কিছু কথা ছিল। তুই কি আমাকে বলবি তুই কেন আমাকে গাড়ি থেকে নামতে দিলি না?
চমৎকার -নামতে দিলে কি করতে?
-কি করতাম মানে? সবার সাথে কবরে একটু মাটি দিয়ে আসতাম। লোকটার সাথে আমি দশ বছর কাটিয়েছি। ১০ বছর দীর্ঘ সময়।
-তুমি কি প্রমাণ করতে চাইছ? তুমি তাকে খুব ভালবাসতে?
-এসব আবার কি ধরনের কথা?
-মা আমার কাছে সাধু সাজবে না। তোমার কাছে বহুবার জিজ্ঞেস করেছিলাম, তোমাদের কেন ডিভোর্স হয়েছিল? প্রথমে অবশ্য বাবাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম। বাবা বলেছিল বড় হয়ে তোমাকে জিজ্ঞেস করতে। কিন্তু তুমি কোনদিন সঠিক উত্তর দাওনি। সারাজীবন এটা আমার কাছে একটা রহস্যই রয়ে গেছে। বাবার মৃত্যুর পর সেই রহস্যের সমাধান হয়েছে।আমি এখন জানি কি প্রচন্ড দূর্ব্যবহার তুমি বাবার সাথে করেছো দিনের পর দিন।সুতরাং মাছের মায়ের পুত্রশোকের মত তোমার আমার বাবার কবরের সামনে যাবার কোন অধিকার নাই। যে মানুষটাকে জীবিত থাকতে একটুও শান্তি দাও নাই, এখন তাকে মৃত্যুর পর শান্তিতে থাকতে দাও।
-রহস্যের সমাধান হয়েছে মানে? তোকে কে বললো?
-বাবা বলেছে। বাবা মারা যাবার আগে একটা চিঠি লিখে তার উকিলের কাছে দিয়ে গেছিল। সেখানে বাবা বলেছে তোমাদের বিচ্ছেদের কারণ।তুমি নাকি বলেছিলে বাবা মারা গেলে তার লাশে তুমি থুতু দিতে চাও? এরকম একটা কথা তুমি কিভাবে বললে মা? নিজের বাবা বলে বলছি না, এরকম মাটির কাছাকাছি একটা মানুষ এই জীবনে আমি দ্বিতীয়টি দেখিনি।

-মারে, কিছু কিছু মানুষের ভিতরে আত্মবিনাশী বীজ থাকে। নিজেদের ক্ষতি করাতেই তাদের আনন্দ। এইযে আমার হাতে কাটা দাগগুলো দেখছিস, তুইতো বহুবার জিজ্ঞেস করেছিস এগুলো কোথা থেকে হয়েছে? আজকে তোকে বলি। ক্লাস ফোরে পড়ার সময় আমি নিজে পেন্সিল কাটার ব্লেড দিয়ে এগুলি করেছি। তখন বিকেল বেলা খেলার সময় আমাকে প্রাইভেট টিচারের কাছে পড়তে পাঠানো হতো। কেন আমাকে খেলার সময় পড়তে বলা হচ্ছে, এই তুচ্ছ কারণে আমি এই কাজটি করেছি। মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি থাকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখার, সেখানে আমি নিজ হাতে নিজের ক্ষতি করেছি। তোকে একটা কথা বলি। তোর বাবা যে খুব ভালো মানুষ ছিলেন এটা আমিও জানি। কিন্তু কঠিন কিছু কথা বললে তোর বাবার মুখে যে প্রবল কষ্ট দেখতাম, তা থেকে আমি একটা পৈশাচিক আনন্দ পেতাম। তুই কখনো শিশুদের উপরে ছুড়ে মারা দেখেছিস। শিশুরা কিন্তু তখন ভয় না, খিলখিল করে হেসে উঠে, কেন জানিস? কারণ ওরা জানে নীচে সেফটিনেট রয়েছে। কেউ একজন মাটিতে পড়ার আগেই ওদেরকে ধরে ফেলবে। তোর বাবা ছিল আমার সেই সেফটি নেট। আমি কখনো ভাবতেই পারিনি, একটি কথায় সে আমার সাথে সম্পর্ক শেষ করে দিবে। আমি ভেবেছিলাম এটা সারা জীবন চলতে থাকবে।
-বাবা যে খুব ভালো মানুষ ছিলেন এটা কি তুমি কখনো তাকে বলেছ?
-না, তা কখন তাকে বলা হয়নি।দুঃখজনক হলেও সত্যি, আমি তোর বাবাকে ভালবাসতে শুরু করি সে আমাদের বাসা থেকে চলে যাবার পর। সে কথায় পরে আসছি, আগে আমাকে বলতো কি এমন হলো যে কারণে সারাজীবন সেই কথা তোকে বলেনি, কিন্তু মারা যাবার পরে একথাটা তোকে জানাতে হলো?
-বাবা চেয়েছিল আমি যেন তোমার শেষ ইচ্ছা পূরণ করতে দেই। আমি যেন ফিউনোরাল হোমে তোমাকে একলা বাবার লাশের কাছে যেতে দেই, যেন তুমি চাইলে তার লাশে থুতু দিতে পারো। আচ্ছা বলতো তুমি তাকে এত অপছন্দ করতে কেন? বাবা চিঠিতে লিখেছে তুমি নাকি বিয়ের রাত থেকেই তাকে অসম্মান করেছ, কিন্তু কেন?
-আমার খুব একটা ফর্সা ছেলে বিয়ে করবার শখ ছিল। কিন্তু হঠাৎ বাবা মারা যাওয়ায় ভাইদের সংসারে আমার জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছিল। তোর বাবা ছিল আমার সে পরিস্থিতি থেকে বের হবার টিকিট।
-একটা মানুষ কালো, এটাতো তার দোষ হতে পারে না। আইনস্টাইন কি বলেছে জানো মা? Everyone is a genius. But if you judge a fish by its ability to climb a tree, it will live its whole life believing it is stupid .আমার বাবাও তার সারাটা জীবন গাছে উঠতে না পারা সেই মাছের মত কষ্টে কাটিয়েছে। বুঝতেই পারেনি কেন সে তোমাকে সুখী করতে পারত না। সারাটা জীবন একলা কাটিয়ে সে আজ ৬ ফুট মাটির নিচে চলে গেল। আমি কতবার বড় হবার পর পাকাপাকিভাবে তার কাছে চলে আসতে চেয়েছি। সে প্রতিবারই আমাকে বলেছে তোমার মায়ের আমার থেকে তোমাকে বেশি দরকার। আমি একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। জন্ম মুহূর্তে ডাক্তারের একটি শিশুর আম্বিলিকাল কর্ড বিচ্ছিন্ন করে দেবার কথা।আমার ধারণা, যে ডাক্তারের হাতে আমার জন্ম হয়েছিল, কোন এক বিচিত্র কারনে তোমার আর আমার মধ্যে সেই কাজটি সে ঠিকমতো সম্পন্ন করেনি। সারাটা জীবন আমার তোমার আর্ম লেন্থের মধ্যে কাটাতে হয়েছে, যেন হাত বাড়ালেই তুমি আমার নাগাল পাও। কিন্তু আমি ঠিক করেছি আমি তোমার থেকে অনেক দূরে চলে যাবো। বাবা গেল বছর দেশে গিয়ে বেশ কিছু জমি কিনেছে। বাবার পরিকল্পনা ছিল সেখানে সে একটি এতিমখানা বানাবে, যেন কোন জারজ বাচ্চাকে আর কেউ আবর্জনার স্তূপে না ছুড়ে ফেলে। সেই এতিমখানার বাইরে একটা ঘন্টা থাকবে। ঘন্টার নিচে থাকবে একটা টুকরি। মানুষ তাদের অনাকাঙ্ক্ষিত বাচ্চা সেই টুকরিতে রেখে ঘন্টা বাজিয়ে চলে যাবে। আমি ঠিক করেছি বাবার এই অসম্পূর্ণ স্বপ্ন পূরণ করব। বাবা তার সমস্ত স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি আমার নামে লিখে রেখে গেছে। শুধু তাই না, বাবার নামে দুই মিলিয়ন ডলারের একটা লাইফ ইন্সুরেন্স ছিল। সে টাকাটা আমার পাওয়ার কথা কিছুদিনের মধ্যে। আমি নিজেও প্রায় ৬ বছর আইন ব্যবসায় ছিলাম , সেখানে বেশ কিছু টাকা জমিয়েছি। আমি হিসেব করে দেখেছি টাকা-পয়সা নিয়ে এই জীবনে আমাকে আর চিন্তা করতে হবে না । সুতরাং, আমি এমন একটা কিছু করতে চাই, যেন মৃত্যুর সময় আমার কোন আফসোস না থাকে।
-আমি কি তোর সাথে আসতে পারি?
-না মা। তোমাকে বললাম না আমি আম্বিলিকাল কর্ডটা কাটতে চাই। আমার বাবা সারা জীবন একলা কাটিয়েছে, এবার তুমি একটু সেই ওষুধের স্বাদ গ্রহণ করো।
-তোকে একটা কথা বলি। তোর বাবা যেদিন বাড়ি ছেড়ে চলে যায়, তার পরদিন সকালে আমি যখন তার খালি রুমটাতে গেলাম, তখনই আমার বুকের ভেতরটা মোচড় দিয়ে উঠলো। আমি বুঝলাম কত বড় একটা ভুল আমি করেছি। কিন্তু ইগো খুব খারাপ জিনিসরে মা। আমি ভুল করেছি, এটা অধিকাংশ মানুষই স্বীকার করতে পারে না। একটা মজার ব্যাপার কি জানিস? অধিকাংশ মানুষের জীবনেই একটা ২মিনিটের ঘটনা থাকে। প্রায়ই আমাদের মনে হয় যদি সেই মুহূর্তটিতে ফিরে যেতে পারতাম, তবে জীবনটাকে নতুন করে শুরু করতাম। কিন্তু অতীতে ফেরত যাবার কোন উপায়ে আমাদের নেই। নাহলে এমন একটা রাত যায়নি, মাথার উপরের ছাদের দিকে তাকিয়ে নির্ঘুম রাত কাটাতে কাটাতে আমি ভাবিনি, আরেকবার যদি সেই কালরাত্রিতে ফেরত যেতে পারতাম, তবে সেই কঠিন কথাগুলো আমি কখনোই বলতাম না। একাকীত্বের কষ্ট কি আমি জানি। তুই যখন সপ্তাহান্তে দুদিনের জন্য তোর বাবার কাছে যেতি, কিভাবে যে আমি সেই সব দিনগুলি কাটিয়েছি, তোকে ছাড়া আমি বাকিটা জীবন কিভাবে কাটাবো? আমাকে এভাবে একলা ফেলে রেখে চলে যাস না মা।
(৮)
আমার সারাটা জীবন আমি কখনো মায়ের অবাধ্য হই নি। এই প্রথম ঠিক করেছি তাকে ফেলে অনেক দূরে চলে যাবো। আসলে তাও পুরোপুরি ঠিক করতে পারিনি। মায়ের কথায় মনটা কেমন বারবার দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। ইচ্ছে করছে তাকেও আমার সাথে নিয়ে যাই। আচ্ছা আপনারা আমার জায়গা হলে কি করতেন?
রচনাকাল নভেম্বর ২০১৯।

আরেকবার বললে খাব

অচিনপুর ডেস্ক /এসএসববি

Post navigation